Tuesday, November 3, 2015

বুদ্ধিজীবীদের এই দ্বিচারিতাই কিন্তু সহিষ্ণু হিন্দুকে ক্রমশ অসহিষ্ণু করে তুলছে

পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে দেশে এখন মূল সমস্যা হল 'অসহিষ্ণুতা'! দলে দলে জ্ঞানী-গুণী-বিদ্বজ্জন জাতীয় পুরস্কার ফেরত দিচ্ছেন দেশে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রতিবাদে৷ঠিকই তো! ভারতীয় বা হিন্দু সংস্কৃতিতে অসহিষ্ণুতার কোন স্থান নেই৷ আমরা অন্যদের প্রতি কোনদিনই অসহিষ্ণুতা দেখাই নি, বরং পার্সি, ইহুদীদের মত যে সমস্ত জাতির লোকেরা অসহিষ্ণুতার শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে এসেছেন, তাদেরকে আমরা সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছি, দুহাত বাড়িয়ে সসম্মানে তাদেরকে আপন করে নিয়েছি৷ অনেক ভারতীয় রাজা বিভিন্ন সময় ভারতের বাইরে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছেন৷কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাসে আঘাত করেছেন বলে কোন উদাহরণ আমার জানা নেই৷ সম্রাট অশোক এবং পরবর্তী কয়েকজন বৌদ্ধ রাজা অবশ্যই ব্যতিক্রম৷ কিন্তু বলপূর্বক এই বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার কখনই সামাজিক স্বীকৃতি পায় নি এদেশে৷ ফলে বিশাল বৌদ্ধ সাম্রাজ্যের সৌধ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে নি৷ দেশবাসী ফিরে এসেছে সনাতন হিন্দু ভাবধারায়৷তাহলে ভারতে আজ এই অসহিষ্ণুতা কেন?

দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলা যায় যে ভারতে এই অসহিষ্ণুতার পরিবেশ আজকে হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠে নি। এই অসহিষ্ণুতার বীজ স্থায়ীভাবে ভারতে বপন হয়েছিল রাজা দাহিরের পতনের সাথে সাথেই।এর আগে শক, হূণ, কুষাণদের নৃশংস অত্যাচারের সাক্ষী আমরা হয়েছি ঠিকই৷ কিন্তু সেই আক্রমণগুলো ছিল রাজনৈতিক৷ তারা ভারত অক্রমণ করে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে, সম্পদ লুঠ করেছে, নরসংহার করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে - সাম্রাজ্যলোলুপ আক্রমণকারীরা যা যা করে থাকে, সেই সব কিছুই তারা করেছে৷ কিন্তু ভারতীয়দের উপর তাদের সংস্কৃতি বা বিশ্বাস জবরদস্তি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে নি৷ বরং এই সমস্ত শক্তিগুলোর রাজনৈতিক পতন হওয়ার সাথে তারা ভারতীয় সমাজে নিজেদেরকে বিলীন করে ভারতীয় সংস্কৃতিকেই আপন করে নিয়েছে৷ আমরাও পুরোনো কথা ভুলে গিয়ে তাদেরকে গ্রহণ করে নিতে কোন দ্বিধা করি নি৷ কিন্তু রাজা দাহিরের পতনের মাধ্যমে ভারতে একটি সুদূর প্রসারী ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের সূত্রপাত হয় - যার নাম ইসলাম! অন্য ধর্ম, মতবাদ, বিশ্বাস, সংস্কৃতির প্রতি তীব্র বিদ্বেষ, ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতাই ইসলামিক সাম্রাজ্যবাদের মূল প্রেরণা, ইসলামিক ব্রাদারহুডের মূল ভিত্তি৷ আর ভারতে এই অসহিষ্ণুতার ফলশ্রুতিই হল তরবারির সামনে গণ-ধর্মান্তরকরণ, নৃশংস কাফেরনিধন, কাফের নারীদের ধর্ষণ৷ সেই পরম্পরারই জের টেনে ভারতে গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং, নোয়াখালির গণহত্যা, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, দেশ বিভাজন, লক্ষ লক্ষ হিন্দুর উদ্বাস্তু হয়ে যাওয়া৷ এখানেই শেষ নয়৷ পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে এই অসহিষ্ণুতার কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না, অবশিষ্ট খন্ডিত ভারতেও ইসলামের এই অসহিষ্ণু দর্শনের বাস্তব প্রয়োগের ভুরি ভুরি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে৷ তার মধ্যে কাশ্মীর উপত্যকাকে হিন্দুশূন্য করে দেওয়া, ভারত থেকে তসলিমাকে তাড়ানোর জন্য কলকাতার বুকে মুসলমানদের তান্ডব, প্যারিসের কোন পত্রিকায় প্রকাশিত মহিলাদের নগ্ন দেহে আল্লাহ-র পাক আরবী ভাষা লেখা ছবি পুনঃপ্রকাশিত করার অপরাধে(!!) ৩৬৫ দিন নামক পত্রিকার অফিস এবং সাথে সাথে শিয়ালদায় গাড়ি, বাস ভাঙচুর করা, এই বছর দুর্গাপূজার সময় পুরশুড়ায় মূর্তি ভাঙা, নলহাটির কাংলাপাহাড়িতে মুসলিমদের পক্ষ থেকে মাস পিটিশন দিয়ে দুর্গাপূজা বন্ধ করে দেওয়া, মালদার বৈষ্ণবনগরে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় আক্রমণ করা, বর্ধমানের নতুনহাট এমনকি শহরের মধ্যে বাজেপ্রতাপপুরে মূর্তি ভেঙে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করা, ডায়মন্ড হারবারের সরিষায় মহরমের মিছিল থেকে দুর্গামন্ডপে আক্রমণ করে সাম্প্রদায়িক সঙ্ঘর্ষ সৃষ্টি করা - ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য৷

তালিকা দীর্ঘায়িত করতে চাই না৷ কিন্তু এই সমস্ত ঘটনার দিকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে তাকালে একথা জলের মত স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ভারতে অসহিষ্ণুতার বিষাক্ত বাতাবরণ সৃষ্টির জন্য প্রত্যক্ষভাবে দায়ী ভারতের মুসলিম সমাজ৷ হ্যাঁ আমি সম্পূর্ণ সমাজকে এই জন্যই দায়ী করবো যে, কোথাও এই সব ঘটনার বিরোধিতা করতে মুসলমানদেরকে আমি এগিয়ে আসতে দেখছি না৷ আর এই কাজে পরোক্ষভাবে এদের যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছেন দেশের ভোটলোলুপ রাজনৈতিক নেতারা এবং এদের পেটোয়া ভন্ড বুদ্ধিজীবীরা৷ মুসলমানদের এত সব অসহিষ্ণু আচরণ এই সব ভন্ড বুদ্ধিজীবীদের চোখ এড়িয়ে যায়, অথচ দাদরি-র ঘটনা নিয়ে তাদের হৃদয় ফেটে যাওয়ার উপক্রম - এই দ্বিচারিতাই কিন্তু সহিষ্ণু হিন্দুকে ক্রমশ অসহিষ্ণু করে তুলছে৷ এই প্রসঙ্গে তসলিমা নাসরিনের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যের উল্লেখ না করলেই নয়৷ তিনি বলেছেন মুসলমানদের অসহিষ্ণুতার কারণ ইসলামের ধর্মীয় শিক্ষা, আর হিন্দুদের অসহিষ্ণুতার কারণ ভারতের নেতাদের মুসলিমতোষণ৷কী যথার্থ মূল্যায়ন! তাই  প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে হিন্দুর অসহিষ্ণুতা ক্রমাগতই বাড়তে থাকবে, যতদিন না দেশে এই মুসলিমতোষণ বন্ধ হয় এবং তোষণকারী নেতাদের উচ্ছিষ্টভোজী এই সব ভন্ড বুদ্ধিজীবীদের পক্ষপাতমূলক আচরণ বন্ধ হয়৷ মোদীজীকে সবিনয় নিবেদন, আর এই ব্যাপারে নীরব না থেকে দেশবিরোধী, শত্রুদের আনন্দপ্রদানকারী, দেশে সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নতাবাদের আগুন জ্বালানোর ষড়যন্ত্রকারী এই সব ভন্ডদের পর্দাফাঁস করে এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন