Tuesday, February 2, 2016

আমরা ঘরপোড়া গরু কিন্তু সিঁদুরে মেঘ দেখেও না দেখার ভান করছি

আজকেও বাংলার রাজনীতি ইন্দিরা আবাস, বেকার ভাতা, বিধবা ভাতা, বিপিএল কার্ড, ব্যাঙ্ক লোন থেকে শুরু করে সবুজায়ন - শিল্পায়ন - রাস্তাঘাট - কর্মসংস্থান অর্থাৎ ব্যক্তিগত এবং কিছুটা সমষ্টিগত উন্নতির চার দিকে আবর্তিত হচ্ছে৷ স্বাভাবিক অবস্থায় এটাই কাম্য৷ কিন্তু ভারতীয় রাজনীতিতে মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং এর পরিণাম সম্পর্কে উদাসীনতা দেখে মনে হচ্ছে আমরা বাড়িতে টাকা-পয়সা, সোনাদানা, দামী আসবাব পত্র সংগ্রহ করার নেশায় বাড়িতে নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় শক্ত দরজা জানলা লাগানোর কথাটা বেমালুম ভুলে যাচ্ছি৷ আমরা ঘরপোড়া গরু কিন্তু সিঁদুরে মেঘ দেখেও না দেখার ভান করছি৷ যেদিন ধর্মের ভিত্তিতে বাংলা ভাগ হয়েছিল, সেদিন কি শুধু অধুনা পূর্ববঙ্গের বাঙালী হিন্দুর পরাজয় হয়েছিল? আমরা, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীরাও কি সেদিন সেই ধর্মীয় বিচ্ছিন্নতাবাদের সামনে আত্মসমর্পণ করি নি? আজ বাংলার ২৭% মুসলিমদের পক্ষ থেকে ত্বহা সিদ্দিকি ৪৮টি বিধানসভা সিটের ভাগ্যবিধাতা বলে নিজেকে ঘোষণা করে কি শুধুমাত্র বাংলার রাজনৈতিক নেতাদেরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন? নাকি এই চ্যালেঞ্জটা আপামর পশ্চিমবঙ্গবাসী বাঙালীর সামনে? আগামী পাঁচ বছর পরেও কি সংখ্যাটা ৪৮ই থাকবে? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নামের পাশে কোন হিন্দু পদবী আর কতদিন শোভা পাবে? এই সব প্রশ্নের শেষ কোথায়? শেষ প্রশ্নগুলি অবশ্যই এই রকম - বাংলা কবে কাশ্মীরে পরিণত হবে? বাংলা কবে হিন্দুবিহীন হবে?

মোদ্দা কথা আমরা ভয়ে এই সব প্রশ্নগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছি৷ মানসিক ভাবে আমরা হার মেনে নিয়েছি৷ না হলে বেড়া না দিয়ে সব্জী চাষ করার মত নির্বোধের কাজ অন্তত বাঙালীর বুদ্ধির সাথে ম্যাচ করে না৷ সাহস অবলম্বন করুন৷ আসুন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের নিরাপদ জীবনের কথা ভেবে কিছুদিনের জন্য ইন্দিরা আবাস আর চাকরীর কথা ভুলে যাই৷ বাংলাকে কাশ্মীর হতে দেব না৷ বাংলা থেকে বাঙালীয়ানাকে হারিয়ে যেতে দেব না৷ জলকে জল না বলে পানি বলার মত পরিস্থিতি হতে দেব না৷ আমরা স্নান করবো, গোসল করতে বাধ্য হব না৷ আমরা চেক লুঙ্গি পরবো নিজের ইচ্ছায়, বাধ্য হয়ে নয়৷ বাংলার গ্রামে পৌষ মেলা হবে, চড়কপূজা হবে৷ মা কালী পাঁঠার মাথা খাবে, বুড়ো শিব ডুগডুগি বাজাবে৷ মা দুর্গাকে বিদায় দিতে গিয়ে দশমীর দিন আমার মায়েরা চোখের জল ফেলবে৷ লাল পাড়ের সাদা শাড়ি পরে আমার বোনেরা সরস্বতী পূজো করবে, কালো বোরখার অন্ধকারে হারিয়ে যাবে না৷ বীরভূমের বাউল, মালদার গম্ভীরা আর পুরুলিয়ার ছৌনৃত্যের জায়গা আলকাফ আর জালসা কোনদিন নিতে পারবে না - এই স্বপ্ন নিয়ে সব নেতাদের কাছে একবার আমরা যাই৷ চলুন জেনে আসি কে বাংলাকে বাংলাই রাখতে চায়৷ তারপরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি আমার পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিধানসভা পর্যন্ত সমস্ত ক্ষমতা আমরা কার হাতে তুলে দেব৷ বাংলার ভবিষ্যত বাংলাই হোক - বাংলাদেশ নয়৷

সেদিন মুসলমানদের মনে পড়ে যাবে যে তারাও হিন্দু ছিল

ভারতের ৯৮% মুসলমান হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত৷ আজকে সংরক্ষণ ও অন্যান্য বিশেষ অধিকারের সাথে সাথে সমস্ত পার্টির জামাই আদর ভোগ করছে বলে ওদের সেকথা মনে পড়ছে না যে ওরাও হিন্দুই ছিল৷ যেদিন ভারতে সকলের জন্যে সমান আইন হবে, কেউ বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাবে না এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদেরকে কঠোর হাতে, নির্মমভাবে দমন করা শুরু হবে, সেদিন মুসলমানদের মনে পড়ে যাবে যে তারাও হিন্দু ছিল৷ এতদিন আমরা 'হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই' বলে চিৎকার করে এসেছি, ওরা কর্ণপাত করে নি৷ তখন ওরাই দুহাত বাড়িয়ে ভাই ভাই বলে আমাদের দিকে ছুটে আসবে৷ তবে যেদিন কোন সরকার এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে, সেদিন ভারতের অনেক জায়গায় কালিয়াচকের মত ঘটনা ঘটবে৷ সেই সময় তাদের জবাব দেওয়ার দায়িত্ব হিন্দু সমাজকেই নিতে হবে৷ পুলিশ প্রশাসন আমাদের রক্ষা করতে পারবে না৷ তাই আমার মতে হিন্দু যুবকদের কর্তব্যঃ-
১) আসন্ন সংঘর্ষের প্রস্তুতি নাও, আমরা না চাইলেও সংঘর্ষ অবশ্যম্ভাবী৷
২) সাহসী ও লড়াকু সঙ্গী-সাথী বাড়াও৷
৩) রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত কর৷

হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক চাই

পকেটে ২০ লাখ টাকা নিয়ে একদিন চার পাঁচটা ব্যাঙ্কে যান৷ ম্যানেজারকে বলুন টাকাটা আপনার ব্যাঙ্কে রাখতে চাই, বিশেষ কি পাওয়া যাবে বলুন৷ সব ব্যাঙ্কের ম্যানেজারই আপনাকে বসিয়ে চা খাওয়াবে, গরম সিঙাড়াও খাওয়াতে পারে৷ টাকাটা যে ব্যাঙ্কে রাখবেন, তারা আপনাকে আরও বিশেষ খাতিরদারী করবে৷ আপনি যে খাতিরদারীটা পাচ্ছেন তার মূল কারণ হল ওই টাকাটা আপনার কথায় অন্য ব্যাঙ্কে চলে যেতে পারে৷ আর যতক্ষণ আপনার এই টাকা তুলে নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে, ততদিন আপনার খাতিরদারী বজায় থাকবে৷

রাজনৈতিক দলগুলো হল ব্যাঙ্কের মত৷ আপনি হলেন ত্বহা সিদ্দিকির মত কেউ একজন৷ আর টাকাগুলো হল ভোট বা ভোটার৷ লক্ষণীয় বিষয়, টাকার মালিক কিন্তু আপনি৷ ব্যাঙ্ক নয়৷ ঠিক সেই রকম, ভোটাররা ত্বহা সিদ্দিকির মালিকানাধীন, টিএমসির নয়৷ আপনি যেমন আপনার টাকা একটি ব্যাঙ্ক থেকে তুলে অন্য ব্যাঙ্কে রাখতে পারেন, ঠিক সেই ভাবে সিদ্দিকি সাহেব তার ভোটারদের এক পার্টি থেকে অন্য পার্টিতে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারেন৷
সিদ্দিকি সাহেবের কথায় যত সংখ্যক ভোটার পার্টি বদল করতে রাজী থাকবেন, সেই সংখ্যাটাই হল সিদ্দিকি সাহেবের ভোটব্যাঙ্ক৷ তাই কোন পার্টির ভোটব্যাঙ্ক হয় না, পার্টির হয় সাপোর্ট বেস৷ এই সাপোর্ট বেসের চুড়ান্ত আনুগত্য থাকে পার্টির প্রতি৷ এরা পার্টির সৈনিক৷ কিন্তু ভোটব্যাঙ্কের বৈশিষ্ট্য হল, এটা ট্রান্সফারেবল৷ এদের আনুগত্য অন্য জায়গায় বাঁধা৷ পার্টি এদের কাছে উদ্দেশ্য পূর্তির যন্ত্র৷

তাই ভোটব্যাঙ্ক এবং সাপোর্ট বেস-এর মধ্যে সূক্ষ্ম পার্থক্যটা বুঝতে হবে৷ আমরা হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক চাই৷ এই ভোটব্যাঙ্ক একমাত্র হিন্দুর স্বার্থেই ব্যবহৃত হবে৷ পার্টির হয়ে কাজ করলেও সেটা করবে হিন্দুর স্বার্থে, পার্টির স্বার্থে নয়৷ কিন্তু এই হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক তৈরী করে সেই ভোটব্যাঙ্ককে যদি কোন পার্টির স্থায়ী সাপোর্ট বেসে পরিণত করে ফেলি, তাহলে কোন পার্টির কাছেই কি এর কোন মূল্য থাকবে? তাহলে হিন্দুর স্বার্থ কিভাবে রক্ষিত হবে? তাই আমাদের স্থির করতে হবে, আমরা হিন্দুর সৈন্যদল তৈরী করতে চাই, না কি কোন পার্টির সৈন্যদল তৈরী করতে চাই৷ এটা ঘটনা যে, হিন্দুর ভোটব্যাঙ্ক সব সময় কোন না কোন পার্টির সাথে থাকবে৷ কিন্তু সেটা কোন্ পার্টি, তা সময় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্ধারিত হবে৷ হিন্দুর ইস্যুতে পার্টির রেসপন্সের উপরে নির্ধারিত হবে৷ সেটা স্থায়ীভাবে কোন পার্টির সাপোর্ট বেস-এ পরিণত হবে না৷ এটাই আমার 'ভোটব্যাঙ্ক'-এর কল্পনা৷

ভারতকে ইংরেজরা ভাগ করে নি, ভাগ করেছে কোরাণ আর হাদীস

ভারতকে ইংরেজরা ভাগ করে নি, ভাগ করেছে কোরাণ আর হাদীস৷ কাশ্মীরকে হিন্দুশূন্য পাকিস্তান করে নি, করেছে সেই কোরাণ আর হাদীস৷ জুরানপুর, সমুদ্রগড় থেকে শুরু করে কালিয়াচক - সব ঘটনার পিছনে আছে সেই কোরাণ আর হাদীস৷ এই সত্যটাকে যারা স্বীকার করতে প্রস্তুত নয়, তারা হয় অন্ধ, না হয় ভন্ড৷ অন্ধদের প্রতি রইল সমবেদনা আর ভন্ডদের প্রতি হৃদয়ের গভীর থেকে চরম ঘৃণা৷ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আমি বিন্দুমাত্র ঘৃণা করি না৷ কারণ তারা ঘোষিত শত্রু৷ তারা ভরতকে তথা সমগ্র পৃথিবীকে দারুল ইসলামে পরিণত করার লক্ষ্য প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে৷ সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের পদ্ধতিও স্পষ্ট - জেহাদ৷ এর মধ্যে কোন গোপনীয়তা নেই৷ যতদিন আপনি এবিষয়ে অজ্ঞ থাকবেন, ততদিন কোন সংঘর্ষ নেই৷ যেদিন আপনি সব জেনে এবং বুঝে রুখে দাঁড়াবেন সেইদিন থেকে শুরু হবে যুদ্ধ৷ ম্যাসেজটা লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার৷ যারা সেকুলারিজমের ঢাকঢোল বাজিয়ে হিন্দুদেরকে এই ম্যাসেজটা শুনতে বা বুঝতে দিচ্ছে না, তারা ওদের এজেন্ট৷ কেউ প্রকাশ্যে ওদের কাজ করছে, কেউ হিন্দুর দলে ভীড়ে গিয়ে বন্ধুর ছদ্মবেশে এই কাজ করছে৷ এরা গুয়ের এ পিঠ আর ও পিঠ৷ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল, কালিয়াচক৷ সেখানে কেউই সাম্প্রদায়িকতা দেখতে পেলেন না৷ এর চেয় বড় মিথ্যা, বড় প্রতারণা আর কি হতে পারে! তাই এদের প্রতি একরাশ ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারলাম না আজ মকর সংক্রান্তির পুণ্যদিনে৷ হিন্দু যোদ্ধাদের প্রতি রইল অনেক অনেক শুভকামনা এবং এক গৈরিক হিন্দু ভারতের স্বপ্ন৷

এর পরের ধাপ প্রতিরোধ

হিন্দুরা জাগছে৷ রাস্তায় নামছে৷ এর অর্থ প্রতিবাদের পর্যায়ে বাংলার হিন্দুরা উপনীত হয়েছে৷ এর পরের ধাপ প্রতিরোধ৷ এই প্রতিরোধের কাজ ছোট মাত্রায় হলেও বিগত আট বছর ধরে হিন্দু সংহতি করে চলেছে৷ সেই অভিজ্ঞতার আধারে বলতে পারি, প্রতিরোধ মানে সংঘর্ষ৷ আর সংঘর্ষ মানেই ক্ষয়ক্ষতি৷ হারলে তো বটেই, জিতলেও ক্ষয়ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী৷ হিন্দু সংহতির ছেলেরা এই মূল্য দিতে প্রস্তুত বলেই তারা লড়ছে, কোন জায়গায় জিতছে আবার কোন জায়গায় হারছে৷ কিন্তু কেস খেতে হবে অথবা জেলে যেতে হবে বলে পিছিয়ে যাচ্ছে না৷

আজ সময়ের দাবী, বাংলার হিন্দুকে প্রতিবাদের পর্যায় থেকে প্রতিরোধের পর্যায়ে উত্তীর্ণ হতে হবে৷ এটা তখনই সম্ভব হবে, যখন হিন্দুরা উপলব্ধি করবে যে, বিনা যুদ্ধে সূচ্যাগ্র মেদিনীও পাওয়া যাবে না৷ আর যুদ্ধ মানেই তার মূল্য চুকাতে হবে৷ যেখানে শ্রীকৃষ্ণের প্রিয় অর্জুনকেও ধর্মযুদ্ধে অভিমন্যুকে হারাতে হয়েছিল, আমরা কোন ক্ষেতের মুলো!

তাই আজ সময়ের ডাকে আমরা কতটা সাড়া দিতে প্রস্তুত, তার উপরেই নির্ভর করবে আমাদের ভবিষ্যত৷ তবে আমরা নিশ্চই সেই দিনটার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকবো না, যেদিন সম্পূর্ণ হিন্দু সমাজ লড়তে প্রস্তুত হবে তারপরে লড়াই শুরু হবে! লড়াই শুরু হয়ে গেছে৷ আমরা WITH YOU,  WITHOUT YOU এমনকি  IN SPITE OF YOU এগিয়ে যাব৷ আমাদের এই ছোট নদী ফল্গুতে পরিণত হবে, নাকি বিশাল রূপ নিয়ে সাগরের বুকে ঝাপিয়ে পড়বে তা সময় বলবে৷

আজও দেশবিভাজনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় নি

আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের বাঙালী উদ্বাস্তুদের সমস্যার মূল কারণ হল আজও দেশবিভাজনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয় নি৷ জন বিনিময় বাদ দিয়ে দেশবিভাগের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে পারে না৷ তাই আজ হোক অথবা কাল হোক, জন বিনিময় করতেই হবে৷ না হলে আবার কাশ্মীর, আবার পাকিস্তান! আবার লাখ লাখ উদ্বাস্তু হিন্দুর চাপ অবশিষ্ট ভারতের উপরে৷ আর জন বিনিময়ের কথা উঠলেই গৃহযুদ্ধ, আজ হোক অথবা কাল হোক৷ এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার জন্য একজন আব্রাহাম লিঙ্কন চাই৷ আর চাই সেই আব্রাহাম লিঙ্কনের পিছনে দন্ডায়মান দেশের অখন্ডতা রক্ষার জন্য রণসাজে সজ্জিত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হিন্দু সমাজ৷