Tuesday, November 3, 2015

বুদ্ধিজীবীদের এই দ্বিচারিতাই কিন্তু সহিষ্ণু হিন্দুকে ক্রমশ অসহিষ্ণু করে তুলছে

পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে দেশে এখন মূল সমস্যা হল 'অসহিষ্ণুতা'! দলে দলে জ্ঞানী-গুণী-বিদ্বজ্জন জাতীয় পুরস্কার ফেরত দিচ্ছেন দেশে অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রতিবাদে৷ঠিকই তো! ভারতীয় বা হিন্দু সংস্কৃতিতে অসহিষ্ণুতার কোন স্থান নেই৷ আমরা অন্যদের প্রতি কোনদিনই অসহিষ্ণুতা দেখাই নি, বরং পার্সি, ইহুদীদের মত যে সমস্ত জাতির লোকেরা অসহিষ্ণুতার শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে এসেছেন, তাদেরকে আমরা সাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছি, দুহাত বাড়িয়ে সসম্মানে তাদেরকে আপন করে নিয়েছি৷ অনেক ভারতীয় রাজা বিভিন্ন সময় ভারতের বাইরে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছেন৷কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাসে আঘাত করেছেন বলে কোন উদাহরণ আমার জানা নেই৷ সম্রাট অশোক এবং পরবর্তী কয়েকজন বৌদ্ধ রাজা অবশ্যই ব্যতিক্রম৷ কিন্তু বলপূর্বক এই বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার কখনই সামাজিক স্বীকৃতি পায় নি এদেশে৷ ফলে বিশাল বৌদ্ধ সাম্রাজ্যের সৌধ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে নি৷ দেশবাসী ফিরে এসেছে সনাতন হিন্দু ভাবধারায়৷তাহলে ভারতে আজ এই অসহিষ্ণুতা কেন?

দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলা যায় যে ভারতে এই অসহিষ্ণুতার পরিবেশ আজকে হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠে নি। এই অসহিষ্ণুতার বীজ স্থায়ীভাবে ভারতে বপন হয়েছিল রাজা দাহিরের পতনের সাথে সাথেই।এর আগে শক, হূণ, কুষাণদের নৃশংস অত্যাচারের সাক্ষী আমরা হয়েছি ঠিকই৷ কিন্তু সেই আক্রমণগুলো ছিল রাজনৈতিক৷ তারা ভারত অক্রমণ করে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে, সম্পদ লুঠ করেছে, নরসংহার করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে - সাম্রাজ্যলোলুপ আক্রমণকারীরা যা যা করে থাকে, সেই সব কিছুই তারা করেছে৷ কিন্তু ভারতীয়দের উপর তাদের সংস্কৃতি বা বিশ্বাস জবরদস্তি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে নি৷ বরং এই সমস্ত শক্তিগুলোর রাজনৈতিক পতন হওয়ার সাথে তারা ভারতীয় সমাজে নিজেদেরকে বিলীন করে ভারতীয় সংস্কৃতিকেই আপন করে নিয়েছে৷ আমরাও পুরোনো কথা ভুলে গিয়ে তাদেরকে গ্রহণ করে নিতে কোন দ্বিধা করি নি৷ কিন্তু রাজা দাহিরের পতনের মাধ্যমে ভারতে একটি সুদূর প্রসারী ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের সূত্রপাত হয় - যার নাম ইসলাম! অন্য ধর্ম, মতবাদ, বিশ্বাস, সংস্কৃতির প্রতি তীব্র বিদ্বেষ, ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতাই ইসলামিক সাম্রাজ্যবাদের মূল প্রেরণা, ইসলামিক ব্রাদারহুডের মূল ভিত্তি৷ আর ভারতে এই অসহিষ্ণুতার ফলশ্রুতিই হল তরবারির সামনে গণ-ধর্মান্তরকরণ, নৃশংস কাফেরনিধন, কাফের নারীদের ধর্ষণ৷ সেই পরম্পরারই জের টেনে ভারতে গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং, নোয়াখালির গণহত্যা, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, দেশ বিভাজন, লক্ষ লক্ষ হিন্দুর উদ্বাস্তু হয়ে যাওয়া৷ এখানেই শেষ নয়৷ পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে এই অসহিষ্ণুতার কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না, অবশিষ্ট খন্ডিত ভারতেও ইসলামের এই অসহিষ্ণু দর্শনের বাস্তব প্রয়োগের ভুরি ভুরি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে৷ তার মধ্যে কাশ্মীর উপত্যকাকে হিন্দুশূন্য করে দেওয়া, ভারত থেকে তসলিমাকে তাড়ানোর জন্য কলকাতার বুকে মুসলমানদের তান্ডব, প্যারিসের কোন পত্রিকায় প্রকাশিত মহিলাদের নগ্ন দেহে আল্লাহ-র পাক আরবী ভাষা লেখা ছবি পুনঃপ্রকাশিত করার অপরাধে(!!) ৩৬৫ দিন নামক পত্রিকার অফিস এবং সাথে সাথে শিয়ালদায় গাড়ি, বাস ভাঙচুর করা, এই বছর দুর্গাপূজার সময় পুরশুড়ায় মূর্তি ভাঙা, নলহাটির কাংলাপাহাড়িতে মুসলিমদের পক্ষ থেকে মাস পিটিশন দিয়ে দুর্গাপূজা বন্ধ করে দেওয়া, মালদার বৈষ্ণবনগরে বিসর্জনের শোভাযাত্রায় আক্রমণ করা, বর্ধমানের নতুনহাট এমনকি শহরের মধ্যে বাজেপ্রতাপপুরে মূর্তি ভেঙে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সৃষ্টি করা, ডায়মন্ড হারবারের সরিষায় মহরমের মিছিল থেকে দুর্গামন্ডপে আক্রমণ করে সাম্প্রদায়িক সঙ্ঘর্ষ সৃষ্টি করা - ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য৷

তালিকা দীর্ঘায়িত করতে চাই না৷ কিন্তু এই সমস্ত ঘটনার দিকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে তাকালে একথা জলের মত স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ভারতে অসহিষ্ণুতার বিষাক্ত বাতাবরণ সৃষ্টির জন্য প্রত্যক্ষভাবে দায়ী ভারতের মুসলিম সমাজ৷ হ্যাঁ আমি সম্পূর্ণ সমাজকে এই জন্যই দায়ী করবো যে, কোথাও এই সব ঘটনার বিরোধিতা করতে মুসলমানদেরকে আমি এগিয়ে আসতে দেখছি না৷ আর এই কাজে পরোক্ষভাবে এদের যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছেন দেশের ভোটলোলুপ রাজনৈতিক নেতারা এবং এদের পেটোয়া ভন্ড বুদ্ধিজীবীরা৷ মুসলমানদের এত সব অসহিষ্ণু আচরণ এই সব ভন্ড বুদ্ধিজীবীদের চোখ এড়িয়ে যায়, অথচ দাদরি-র ঘটনা নিয়ে তাদের হৃদয় ফেটে যাওয়ার উপক্রম - এই দ্বিচারিতাই কিন্তু সহিষ্ণু হিন্দুকে ক্রমশ অসহিষ্ণু করে তুলছে৷ এই প্রসঙ্গে তসলিমা নাসরিনের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্যের উল্লেখ না করলেই নয়৷ তিনি বলেছেন মুসলমানদের অসহিষ্ণুতার কারণ ইসলামের ধর্মীয় শিক্ষা, আর হিন্দুদের অসহিষ্ণুতার কারণ ভারতের নেতাদের মুসলিমতোষণ৷কী যথার্থ মূল্যায়ন! তাই  প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে হিন্দুর অসহিষ্ণুতা ক্রমাগতই বাড়তে থাকবে, যতদিন না দেশে এই মুসলিমতোষণ বন্ধ হয় এবং তোষণকারী নেতাদের উচ্ছিষ্টভোজী এই সব ভন্ড বুদ্ধিজীবীদের পক্ষপাতমূলক আচরণ বন্ধ হয়৷ মোদীজীকে সবিনয় নিবেদন, আর এই ব্যাপারে নীরব না থেকে দেশবিরোধী, শত্রুদের আনন্দপ্রদানকারী, দেশে সাম্প্রদায়িক বিচ্ছিন্নতাবাদের আগুন জ্বালানোর ষড়যন্ত্রকারী এই সব ভন্ডদের পর্দাফাঁস করে এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন

Monday, October 19, 2015

যুদ্ধ চলবে

হিন্দ মুসলমানের যুদ্ধ ভারতের মাটিতে সেই দিন থেকে শুরু হয়েছিল, যেদিন প্রথম মুসলমান ব্যক্তিটি দারুল ইসলামের স্বপ্ন নিয়ে ভারতের মাটিতে পা রেখেছিল৷ আর এই যুদ্ধ ততদিন চলবে, যতদিন এই মাটিতে একজনও মুসলমান অবশিষ্ট থাকবে যে ভারতবর্ষকে দারুল ইসলাম বানানোর স্বপ্ন দেখে৷ আর যুদ্ধ যখন হয়, তখন শুধু সৈনিকদেরই মৃত্যু হয় না৷ অনেক নির্দোষ সিভিলিয়ানেরও মৃত্যু ঘটে৷

এই যুদ্ধে শুধুমাত্র ধর্ম পরিবর্তন করে ইসলাম কবুল করেন নি বলে যত হিন্দুকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেই সংখ্যার তুলনায় 'আকলাখ'দের সংখ্যাটা অতিমাত্রায় নগণ্য৷ সুদীর্ঘ মুসলিম শাসনকালের ইতিহাস বাদ দিয়ে শুধু যদি দেশভাগের সময়কার হিন্দু নির্যাতনের হিসাব করতে বসা হয়, তাহলে তার তুলনায় মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা কি ধর্তব্যের মধ্যে আসবে? আজকেও পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে হিন্দুর উপরে যে পাশবিক অত্যাচার চলছে, সেই তুলনায় ভারতের সংখ্যালঘুদের প্রতি সাধারণ হিন্দুদের আচরণ কি রকম? তবুও এক আকলাখ নিয়ে চলছে প্রহসন৷

যারা ভাবেন সরকারের পলিসি এবং পুলিশ এদেশের মুসলমানদের নিরাপত্তা দিচ্ছে, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন৷ হিন্দুর জন্মগত সহিষ্ণুতার সংস্কারই ভারতে মুসলমানদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি৷ না হলে ভারতকে মুসলিমবিহীন করে দিতে হিন্দুদের একদিন, হ্যাঁ মাত্র একটা দিন সময় যথেষ্ট৷ তাই ভারতের মুসলমাদের যে অংশ বার বার হিন্দুর সহনশীলতার পরীক্ষা নিচ্ছে, তাদের মনে শুভবুদ্ধির জাগরণ ঘটানোর দায়িত্ব মুসলিম সমাজের দায়িত্বশীল এবং শুভবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিকদেরকেই নিতে হবে ৷ এক শ্রেণির সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ এবং তাদের উচ্ছিষ্টে প্রতিপালিত বুদ্ধিজীবী সমাজ ভারতের মুসলিমদের প্রতিদিন বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে seperatist মুসলিম গোষ্ঠিগুলোকে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ মদত দিয়ে৷ এতে তাদের স্বার্থ সিদ্ধ হলেও মুসলমানদের বিপদ কিন্তু প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ সারা পৃথিবী যেখানে মুসলিম সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করেছে, সেখানে ভারতে বইছে উল্টো স্রোত! কিন্তু সবার মনে রাখা উচিত যে এই স্রোতে সর্বসাধারণ হিন্দু সমাজ আর গা ভাসাতে প্রস্তুত নয়৷ ক্ষোভ বাড়ছে প্রচন্ড বেগে৷ একে সামাল দেওয়া যে মন্দাক্রান্তাদের পক্ষে সম্ভব নয়, এটা শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মুসলমানদের উপলব্ধি করা খুবই প্রয়োজন৷

সুতরাং এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হবে কি না, তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব মুসলিম সমাজের৷ যদি এখনও seperatist demand এর সিলসিলা চলতে থাকে, চলতে থাকে দেশবিরোধী সন্ত্রাসবাদী জেহাদীদের প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষ মদতদান, তাহলে হিন্দু সমাজকে চরম সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ যুদ্ধ চলবে৷ ততদিন চলবে, যতদিন এই মাটিতে একজনও মুসলমান অবশিষ্ট থাকবে যে ভারতবর্ষকে দারুল ইসলাম বানানোর স্বপ্ন দেখে৷ যুদ্ধের নিয়মে স্বাভাবিকভাবেই দুপক্ষের আরও অনেক নির্দোষ সিভিলিয়নের মৃত্যু হবে৷ তাই যুদ্ধক্ষেত্রে মানুষের মৃত্যু নিয়ে মরা কান্না কাঁদা আর পুরস্কার ফেরত দেওয়ার সেন্টিমেন্টাল নাটকের কোন গুরুত্ব আছে বলে আমি মনে করি না৷

Sunday, October 18, 2015

ভারতের আইনও এই ভগবানের মত

দুই ভাই ছিল৷ বড় ভাই ধর্মভীরু, দেব-দ্বিজে চরম ভক্তি৷ এদিকে ছোট ভাই ততটাই নাস্তিক৷ একদিন ঘটনাচক্রে দুই ভাই বাড়ি থেকে অনেক দূরে এমন এক জায়গায় আটকে গেল, যেখান থেকে সেই রাতে বাড়ি ফেরার কোন ব্যবস্থা নেই৷ অগত্যা কি করা যায়! দুজনে মিলে রাত কাটানোর একটা আস্তানা খুঁজতে লাগলো৷ অনেক খোঁজাখুঁজির পরে একটা মন্দিরের সন্ধান পাওয়া গেল, যেখানে সেই রাতটা কাটানো যায়৷ রাতে খাওয়া দাওয়ার পর দুই ভাই শুয়ে পড়লো৷ বড় ভাই ভক্তি ভরে দেবমূর্তিকে প্রণাম করে, ভগবানের পায়ের কাছে মাথা রেখে শু'লো৷ এদিকে নাস্তিক ছোট ভাই দাদাকে একটু চুলকে দেওয়ার জন্য একেবারে দেবমূর্তির গায়ে পা তুলে শু'লো৷ বড় ভাই অনেক বুঝানোর চেষ্টা করে বিফল হয়ে অবশেষে একরাশ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ঘুমিয়ে পড়লো৷

মাঝরাতে হঠাৎ ভগবান বড় ভাইয়ের স্বপ্নে আবির্ভূত হলেন৷ বললেন, 'ভাইকে পা নামিয়ে শুতে বল্, না হলে বিপদ হয়ে যাবে কিন্তু!' বড় ভাই ধরমড় করে উঠে ছোট ভাইকে ঘুম থেকে তুলে স্বপ্নের কথা বলল৷ কিন্তু কে কার কথা শোনে! ছোট ভাই আরো জুতসই করে মূর্তির গায়ে পা রেখে ঘুমাতে লাগল৷ কিছুক্ষণ পরেই আবার সেই স্বপ্ন৷ এবার রীতিমত হুমকি! তাড়াতাড়ি জেগে উঠে ছোট ভাইয়ের ঘুম ভাঙাতেই বিরক্ত হয়ে সে বলল,' এবার ভগবান দেখা দিলে আমার সাথে সরাসরি কথা বলতে বলবি৷ অন্যায় যদি হয়, সেটাতো আমি করছি! তোর ভগবান আমাকে না বলে তোর উপরে চোটপাট করছে কেন?'

এবার স্বপ্নে দেখা দিলে বড় ভাই ভগবানকে সেই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে ভগবান অগ্নিশর্মা হয়ে বললেন,' তুই আমাকে মানিস বলেই তো তোকে বলতে পারছি৷ ও তো আমাকে মানেই না! ওকে বললে ও কি মানবে আমার কথা? তাই ওকে বলে লাভ কি?'

ভারতের আইনও এই ভগবানের মত৷ যে মানে, তার উপরেই যত চোটপাট! যে মানে না, তাকে কিছু বলার হিম্মত নেই!

হিন্দুত্বকে আমি আমার জাতীয়তা বা Nationality বলে মনে করি

হিন্দুত্বকে আমি আমার জাতীয়তা বা Nationality বলে মনে করি৷ আমার মতে ভারতীয় ও হিন্দু শব্দ সমার্থক৷ কিন্তু ভারতীয় শব্দটার বদলে আমি হিন্দু শব্দটা এই কারণেই ব্যবহার করার পক্ষে যে, সেকু-মাকুরা ভারতীয় শব্দটার প্রকৃত অর্থটাকে কলুষিত করে দিয়েছে৷ আজ ভারতীয় বলতে কাগজে কলমে ভারতের নাগরিকদেরকে বোঝায়৷ পাকিস্তানের পতাকা তুললেও তারা ভারতীয়৷ বন্দেমাতরম বলতে অস্বীকার করলেও তারা ভারতীয়৷ জামাত, আইসিসের দালাল হলেও তারা ভারতীয়৷ আবার রাশিয়া-চিনের দালালি করলেও তারা ভারতীয়৷ মাদ্রাসায় তিরঙ্গা তুলতে রাজী না হলেও তারা ভারতীয়, আবার ঈদের দিন স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তি ঢেকে রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তারা ভারতীয়৷ ভারতে থেকে, ভারতের খেয়ে ভারতের মূল স্রোত থেকে নিজেদের আলাদা করে রাখলেও, ভরতের আইন মানতে অস্বীকার করলেও তারা ভারতীয়! তাই ভারতীয় শব্দটা আজ আর সঠিকভাবে ভারতীয় ভাবটার দ্যোতক হতে পারছে না৷ আর এই শব্দটাকে ব্যবহার করে দেশের শত্রুদেরকেও প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, দেশপ্রেমী নাগরিকদেরকে বিভ্রান্ত করে ভারতের শত্রুদেরকে চিনতে দেওয়া হচ্ছে না৷

তাই হিন্দু শব্দটাই প্রকৃত অর্থে ভারতীয়ত্বকে প্রতিফলিত করে বলে আমি মনে করি৷ এর সাথে উপাসনা পদ্ধতির কোন সম্পর্ক নাই৷ একজন আমেরিকার প্রকৃত নাগরিক যদি নিজেকে আমেরিকান বলতে গর্ব অনুভব করে, বৃটেনের একজন প্রকৃত নাগরিক যদি নিজেকে বৃটিশ বলতে গর্ব অনুভব করে, আমি হিন্দুস্থানের দেশভক্ত নাগরিক নিজেকে হিন্দু বলতে গর্বিত হব না কেন? সেকু-মাকুরা চাড্ডি বলবে বলে?

Follow, lead or quit

লক্ষ্য এক হলেও অনেক সময় বিভিন্ন কারণে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের কাজ আমাদের পছন্দ হয় না, অনেক বিষয়ে মতের মিল হয় না৷ সেক্ষেত্রে একসাথে কাজ করা অসুবিধাজনক হয়ে যায়৷ তার মানে এই নয় যে সবক্ষেত্রেই আমি ঠিক আর অন্যরা ভুল৷ অনেক সময় আদর্শের প্রতি দুপক্ষের commitment প্রশ্নাতীত হলেও মতের অমিল হতেই পারে৷ আবার অনেক ক্ষেত্রে কোন এক পক্ষ অথবা উভয় পক্ষেরই ব্যক্তিগত কিছু mental bias থাকে, যেটাকে সে বা তারা অতিক্রম করতে পারে না৷ ধরা যাক, আমার নেতা খুবই পারদর্শিতার সাথে, আন্তরিকতার সাথে কাজ করছেন, কিন্তু তাঁর এক বা একাধিক ব্যক্তিগত পছন্দ, ঝোঁক আমার অপছন্দের তালিকায় আছে! হতে পারে তাঁর সেই ব্যক্তিগত ঝোঁকের কারণে কাজের ক্ষতি হচ্ছে৷ সেক্ষেত্রে কি করণীয়? আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই সহজ রাস্তা নিয়ে ফেলি - সমালোচনা করা, ক্ষোভ প্রকাশ করা ইত্যাদি৷ একটু ভেবে দেখুন, তিনি যদি পাক্কা রাষ্ট্রবাদী, হিন্দুত্ববাদী হন এবং সাহসের সাথে লড়াইয়ে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিতে যোগ্য হন, তাহলে তাঁর ব্যক্তিগত ত্রুটিকে হাইলাইট না করে সেটাকে কিভাবে ম্যানেজ করা যায়, সেকথা ভাবাটাই কি যুক্তিযুক্ত নয়? তাই প্রথম option হল নেতাকে অনুসরণ করুন এবং সমস্যাগুলোকে ম্যানেজ করুন৷ ধরা যাক নেতার সেই ত্রুটিগুলোর কুপ্রভাবে কাজের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে৷ সংশোধন অসম্ভব৷ সেক্ষেত্রে নিজেকে নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে যেতে হবে৷ তবে সেই নেতৃত্ব নির্বাচন যেন natural selection হয়৷ নিজের যোগ্যতা, প্রতিভা এবং maturity দ্বারা বাকিদের আস্থা অর্জন করা মানেই নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হওয়া৷ তার জন্য গ্রুপবাজী করার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না৷ অর্থাৎ দ্বিতীয় option হল নিজে লীড করুন৷ আর দুটো option ই যদি বিফল হয়, তাহলে সরে যান৷ just quit ৷ নিজের সমমনস্ক ব্যক্তিদেরকে সাথে নিয়ে নতুন উদ্যমে আলাদা করে কাজ শুরু করুন৷ হিন্দুর এই লড়াইয়ে অনেক front ৷ যেকোন একটা ফ্রন্ট পছন্দ করে ময়দানে নেমে পড়ুন৷ এর জন্যও কারুর সাথে সম্পর্ক খারাপ করার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না৷ ঝগড়াঝাটি করার সময়ও হাতে আছে বলে মনে হয় না!

আমাদের শক্তিটাকে সঠিক জায়গাতেই প্রয়োগ করতে হবে

একটা বাস্তব, তা যতই কঠোর হোক না কেন, আমাদের স্বীকার করে নেওয়া উচিত যে বাঙালী হিন্দুরা, ব্যক্তিগত স্তরেই হোক অথবা সাংগঠনিক স্তরেই হোক, কোনদিনই এক ছাতার তলায় এসে লড়াই করতে পারে নি, পারবেও না৷ এক লক্ষ্যে চলার ক্ষেত্রে ভিন্ন মত ও ভিন্ন পথের উদ্ভব অতীতে বার বার হয়েছে, ভবিষ্যতেও হতে থাকবে৷ একে স্বীকার করে নিয়েই পথ বার করতে হবে৷ সংগঠনের নেতৃত্বের মানসিকতাই যেহেতু সংগঠনের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বা policy making এর ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হয়, তাই ব্যক্তির মানসিকতাটাই আসল৷ চিন্তা ভাবনার বৈচিত্র্যকে প্রগতির লক্ষণ বলেই আমি মনে করি৷ কিন্তু পারস্পরিক সম্মান এবং সমন্বয় থাকা দরকার৷ কারো exposure বেশি হবে, কেউ থাকবে আড়ালে৷ এটা ব্যক্তির স্বভাব, তার প্রতিভা, তার যোগ্যতা, তার বেছে নেওয়া পথ বা তার উপরে ন্যস্ত কাজের প্রকৃতির উপরে নির্ভর করবে৷ যার exposure বেশি, তার নাম যশ হবে, যে আড়ালে থাকবে তাকে বা তার অবদানের কথা কেউ জানতে পারবে না৷ কিন্তু পারস্পরিক সম্মান এবং সমন্বয়ের জায়গাটা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখাটা প্রত্যেকের কর্তব্য বলে আমি মনে করি৷

আমরা সচরাচর দেখে থাকি, যে ব্যক্তি বা সংগঠনের exposure বেশি, সে ধরা কে সড়া জ্ঞান করতে শুরু করে৷ পাশাপাশি যারা আড়ালে থাকে তাদের মধ্যে ক্ষোভ, ঈর্ষা দানা বাঁধতে শুরু করে৷ এটা প্রকৃতিগত আর প্রকৃতিকে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে নিজের সমস্ত শক্তি ব্যয় করার পিছনে কোন যুক্তি আছে বলে আমি মনে করি না৷ কারণ আমাদের শক্তিটাকে সঠিক জায়গাতেই প্রয়োগ করতে হবে৷ এটাই Thumb rule৷ কিন্তু মানুষের এই ভাবাবেগগুলো প্রাকৃতিক আর প্রকৃতির বেগগুলোকে চেপে রাখলে নিজের এবং বাকীদের জন্যও তা অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে! শরীর সম্বন্ধীয় বেগগুলোকে পশুদের মত মানুষও সহজেই বুঝতে পারে৷ কিন্তু নিজের চিন্তা ভাবনার গতি প্রকৃতি যারা যত বেশী বুঝতে পারে, তারা তত বেশি পরিণত মস্তিষ্ক বলে আমি মনে করি৷ শারীরিক বেগ উপস্থিত হলে আমরা পশুদের মতই তা থেকে নিবৃত্ত হই৷ কিন্তু তার জন্য কোন সময় বাথরুমে যাই, কোন সময় বেডরুমে যাই৷ পশুদের মত public place এ সেগুলি সম্পন্ন করি না৷ একেই সংস্কৃতি বলা হয়৷ তাই সংস্কৃতিবান ব্যক্তি মানসিক বেগ উপস্থিত হলে সব দিক বিবেচনা করে, প্রতিক্রিয়া করবেন এটাই অপেক্ষিত৷ মোটের উপর, মানসিক বেগ উপস্থিত হলে তাকে চিনতে পারা, সেই উদ্ভুত চিন্তার পিছনে logic এবং honesty আছে, না কি শুধুমাত্র ego আছে - তা বুদ্ধি দিয়ে বিচার করা এবং স্থান, কাল, পাত্র দেখে প্রতিক্রিয়া করা - এই তিনটি বিষয়ে আমাদের যত্নবান হতে হবে৷

সিদ্ধান্ত নিলাম কম্যুনালদের মত কথা আর বলবই না

না আর কম্যুনালদের মত কথা বলবো না৷ মুক্তমনারাই ঠিক৷ লিবারাল ভাবনার থেকে উচ্চ আদর্শ আর নাই৷ তাই সিদ্ধান্ত নিলাম কম্যুনালদের মত কথা আর বলবই না৷

দাঙ্গাবাজ মোদী সরকারের কাছে একজন সদ্য লিবারাল হিসেবে একটা সেকুলার দাবী রাখতেই এই পোস্ট৷ সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প দিক্ বিদিক ছেয়ে ফেলেছে৷ তাই মোদী সাহেবের কাছে নিবেদন, সমস্ত সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সমূলে বিনষ্ট করুন৷ না, শুধু গোল গোল কথা বলেই নিজের দায়িত্ব শেষ করবো না৷ কিছু লিবারাল প্রস্তাবও আপনার সামনে রাখবো৷

১) ধর্মের উল্টোপাল্টা নির্দেশগুলোই সমস্ত গোলমালের মূল৷ তাই ভারতে যত ধর্মমত প্রচলিত আছে, সবগুলির গভীর অধ্যয়ন করা হোক৷ যে যে ধর্মমত অন্য ধর্মে বিশ্বাসীদের প্রতি অসহিষ্ণু হতে শিক্ষা দেয়, অন্য ধর্মকে অপমান করার শিক্ষা দেয়, অন্য ধর্মাবলম্বীদেরকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়, অন্য ধর্মের প্রতি বিশ্বাসকে এবং শ্রদ্ধাকে আঘাত করার নির্দেশ দেয় - সেই সেই ধর্মমতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক৷ কারণ, উদারতার পীঠস্থান এই ভারতের মাটিতে অসহিষ্ণুতার কোন স্থান নাই৷

২) ধর্মের ভিত্তিতে দেশের মানুষকে বিভক্ত করা বন্ধ করুন৷ তার জন্য ধর্মের ভিত্ততে সব রকম সংরক্ষণ বাতিল করুন৷ ধর্মের ভিত্তিতে সমস্ত সরকারী সুযোগ সুবিধা দেওয়া বন্ধ করুন৷ 

৩) ধর্মীয় সংখ্যালঘু শব্দটাকে ব্যান্ করুন৷ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য যতগুলো সরকারী প্রকল্প আছে, সেগুলো অবিলম্বে বন্ধ করা হোক৷

৪) সংবিধান থেকে ৩০এ ধারাটি তুলে দিন৷ এই ধারার বলে শিক্ষার মত পবিত্র ক্ষেত্রকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করা হচ্ছে৷

৫) ধর্মের ভিত্তিতে দেশের নাগরিকদের জন্য আলাদা আইন বাতিল করে সবার জন্য সমান আইন বলবৎ করুন৷

যা ত্তেরী! লিবারাল হতে গিয়ে দেখছি ঘোর কম্যুনাল কথাবার্তা শুরু করে দিয়েছি! না, আর কথা বাড়ালে কম্যুনালই থেকে যাবো৷ লিবারাল আর হওয়া যাবে না৷ তাই শেষ করছি৷ সেকুলার আর লিবারালরা ক্ষমা করবেন৷ কারণ আমি এখন কনফিউসড হয়ে পড়ছি - কম্যুনালরাই আসল লিবারাল, না কি লিবারালরাই আসল কম্যুনাল!

ইসলামের কোর্ হচ্ছে seperatism

গরু কে কেউ মা বললেও যেমন আমার আপত্তি নেই, আবার গরুকে কেউ নিছক খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করলেও আমার কোন আপত্তি নেই৷ কারণ শ্রদ্ধা মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে তৈরী হয়৷ এই বিশ্বাস কতটা যুক্তিপূর্ণ সেটা সেই বিশ্বাসী ব্যক্তির মানসিক গঠন, তার শিক্ষা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিস্থিতির গতি প্রকৃতির বিষয়ে তার knowledge এবং observation ইত্যাদির উপরে নির্ভর করে৷ কিন্তু যতই অযৌক্তিক মনে হোক না কেন, যে কোন কিছু বিশ্বাস করার পূর্ণ স্বাধীনতা মানুষের আছে যতক্ষণ না তার সেই বিশ্বাস অন্যের স্বাধীনতাকে খর্ব করছে, তার বিশ্বাস সমাজ এবং প্রাকৃতির ভারসাম্যকে নষ্ট করছে৷ দেশ, জাতি তথা বিশ্বমানবতার স্বার্থের পরিপন্থী না হওয়া পর্যন্ত কোন ব্যক্তির বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা করার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার অধিকার কারো নেই৷ তবে মানুষের বিশ্বাস নিশ্চই যুক্তি নির্ভর হওয়া উচিত৷ পাশাপাশি সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেও কিছু কিছু বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা মানুষের মনে পরম্পরাগতভাবে তৈরী হয়ে থাকে, হয়তো তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ভবিষ্যতের গর্ভে লুকিয়ে আছে৷

আমি সুনামীর পরে লিটল আন্দামানে গিয়েছিলাম৷ সেখানে স্থানীয় বাসীন্দাদের মধ্যে একজন তার অভিজ্ঞতা শোনাতে গিয়ে বললেন, কয়েক পুরুষ ধরে সেখানকার অধিবাসীদের বিশ্বাস, সমুদ্র যখন দূরে সরে যায় তখন মানুষেরও উচিত সমুদ্র থেকে দূরে সরে যাওয়া৷ সুনামীর ঢেউ যখন আছড়ে পড়ল, ঠিক তার আগে সমুদ্রের জল অনেক দূরে পিছিয়ে গিয়েছিল৷ বিশ্বাসের ভিত্তিতে যারা তা দেখে তখন সমুদ্র থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন, তারা বেঁচে গিয়েছিলেন৷ আর যারা এই বিশ্বাসকে কুসংস্কার মনে করে তাচ্ছিল্য করেছিলেন, তারা আজ আর বেঁচে নেই! অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা না জানলেও অভিজ্ঞতা ও observation এর ভিত্তিতে যে বিশ্বাস তৈরী হয়, তা নিশ্চই উপহাসের বিষয় হতে পারে না৷ গরুকে মা বলতে অস্বীকার করার অধিকার আমার আছে৷ কিন্তু কেউ যদি গরুকে মা বলে বিশ্বাস করে, শ্রদ্ধা করে - তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করাটাকে আমি কোনভাবেই যুক্তিগ্রাহ্য বলে মনে করি না৷ এটাও এক ধরণের সঙ্কীর্ণ মানসিকতার লক্ষণ৷

দ্বিতীয় বিষয় খাদ্যাভ্যাস৷ মানুষের খাদ্যাভ্যাস তৈরী হয় মূলতঃ খাদ্যের খাদ্যগুণ এবং তার availability র উপরে ভিত্তি করে৷ মানুষ সব সময় সস্তায় পুষ্টিকর খাবার খোঁজে৷ যে খাবার যত বেশী available, তার দাম তত কম৷ আমরা ছোটবেলায় পাঁঠার মাংসই বেশী খেতাম৷ ধীরে ধীরে দাম বাড়তে থাকল, দেশী মুরগী সেই জায়গা দখল করতে লাগলো৷ প্রথম প্রথম মুরগী সাধারণ হিন্দু পরিবারগুলোতে গ্রহণযোগ্য ছিল না৷ অনেক বাড়ীতে আলাদা বাসন ছিল মুরগী রান্না করার জন্য! পুরোনো লোকেরা বলতেন - মুরগী ম্লেচ্ছদের খাবার! এখনকার প্রজন্ম ভাবতে পারে এসব কথা? পরে পোল্ট্রি চলে এলো৷ ইদানীং শুকরের মাংসও ধীরে ধীরে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে৷ আমার বলার বিষয় হচ্ছে খাদ্য নির্বাচনের এই বিবর্তন একটা natural process ৷ এ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, আজ কেউ কি বলতে পারে?

এখন এই খাদ্য নির্বাচনের সময় আরও কিছু বিষয় বিচার্য থেকে যায়৷ সেগুলো হল বাস্তুতন্ত্র বা ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য ঠিক থাকছে কি না, আমরা খেয়ে খেয়েই অনেক প্রজাতির পশুকে পৃথিবী থেকেই বিলোপ করে দিতে চলেছি কি না, কোন পশুর মাংস হিসাবে পেটে যাওয়ার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ অন্য বিশেষ উপযোগিতা আছে কি না? ইত্যাদি বিচার করে পশুহত্যা নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব সরকারের৷ কারণ সরকারের হাতে  উপরোক্ত বিচার্য বিষয়গুলোর সঠিক অধ্যয়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্য মেশিনারি আছে৷ আমাদের বাজারে আগে কচ্ছপের মাংস বিক্রি হত, আজকে তা সরকারীভাবে নিষিদ্ধ৷ হরিণের মাংস, বুনো শুয়োরের মাংসের স্বাদ থেকে সরকার আমাদের বঞ্চিত করেছে৷ আমরা কিন্তু মেনে নিয়েছি৷

কিন্তু দেখা যাচ্ছে ভারতে গোহত্যার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট সহ একাধিক হাইকোর্ট নিষেধাজ্ঞা জারী করা সত্ত্বেও তাকে সম্পূর্ণভাবে অমান্য করা হচ্ছে৷ কোনও ধর্মীয় ground এ এই নিষেধাজ্ঞা জারী হয়েছে তা নয়৷ দুধ সরবরাহ এবং কৃষিকাজের ক্ষেত্রে আজও গরুর উপযোগিতা অনস্বীকার্য৷ তাই গরুকে সম্পদ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে গোসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত৷ West Bengal Animal Slaughter Control Act, 1950 অনুসারে পশ্চিমবঙ্গেও প্রজননে, কৃষিকাজে সক্ষম ও ১৪ বছরের কম বয়সী গরুকে হত্যা করা নিষিদ্ধ৷ তা সত্ত্বেও বাস্তবে কি ঘটে চলেছে তা আমাদের কারো অজানা নয়৷ ধর্মের নাম দিয়ে আদালতের অবমাননা করা হচ্ছে বুক ঠুকে! ধর্মীয় স্বাধীনতার নামে ভারতের শিশুদের গোদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া চলছে বিনা বাধায়!

কৃষিকাজে মুসলমানরা কি গরু ব্যবহার করে না? করে৷ মুসলমান শিশুরা কি গরুর দুধ খায় না? খায়৷ গোসম্পদ সংরক্ষণ হলে কি শুধু হিন্দুদেরই লাভ হবে? নিশ্চই না৷ তা সত্ত্বেও গরু কাটার প্রতি এত আগ্রহ কেন মুসলিম সমাজের? কারণ হিন্দুদের উপরে নিজেদের সুপ্রীমেসিকে প্রতিষ্ঠিত রাখা৷ শক-হূণেরা ভারতে এসে একদেহে লীন হয়ে যেতে পারলেও পাঠান-মোগলরা পারে নি৷ কোনদিন পারবেও না৷ কারণ ইসলামের কোর্ হচ্ছে seperatism! তারা পৃথিবীর কোন দেশে গিয়ে মূল সমাজের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতে পারে নি৷ তাদের মুখে সর্বত্র একই দাবি - আলাদা স্টেটাস চাই৷ আলাদা আইন, আলাদা শিক্ষা ব্যবস্থা, আলাদা ভাষা, আলাদা পতাকা ......... আলাদা দেশ!

কেউ সাধারণভাবে গরু খেলে আমার কোন আপত্তি নেই৷ উত্তর পূর্বাঞ্চলের অনেক জনগোষ্ঠীর সাথে গভীর ভাবে মিশে দেখেছি তারা সবদিক দিয়ে হিন্দু হলেও গরু খায়৷ এতে তাদের হিন্দুত্ব বিন্দুমাত্র ফিকে হয়ে যায় বলে আমি মনে করি না৷ তারা এই দেশকে ভালোবাসে, দেশের অখন্ডতা রক্ষায় জীবন দেওয়াকে তারা ধর্ম মনে করে৷ তাই গরু খেলেও কিছু এসে যায় না৷ কিন্তু ভারতের বৃহত্তম হিন্দু সমাজের moral down করার উদ্দেশ্য নিয়ে, ভারতের সংবিধান ও আইনকে অপমানিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে, ভারতের বুকে বসে seperatism এর ভাবনাকে জাগিয়ে রাখার উদ্দেশ্য নিয়ে গোহত্যা করার প্রবণতা মুসলমানদের ত্যাগ করা উচিত৷ 

পরিশেষে সেকু-মাকু ভাইদের কাছে বিনম্র নিবেদন, মুসলমানদের এই গোহত্যা করার আগ্রহের পিছনে motive টাকে অনুধাবন করুন৷ এদের সমর্থন করার অর্থ হচ্ছে ভারত ভাঙার চক্রান্তকে সমর্থন করা৷ এদের শক্তিবৃদ্ধি করার অর্থ হচ্ছে সেকুলারিজমকে হত্যা করা, লিবারালিজমকে ধ্বংস করা৷ রুশদী, তসলিমা, হুমায়ুন আজাদ থেকে শুরু করে সম্প্রতি নিহত মুক্তমনা ব্লগারদের পরিণতির কথা ভাবুন৷ যে কোন এলাকার সেকুলার, লিবারাল পরিবেশ সেখানকার মুসলিমদের শক্তির সাথে inversely proportional! মানলাম আপনারা শিক্ষিত, চাড্ডিরা অশিক্ষিত৷ কিন্তু মাঝনদীতে ঝড় উঠলে সেই অশিক্ষিত মাঝিই কিন্তু আপনাদের মত বিদ্যেবোঝাই বাবু মশাইদের পরিত্রাতা, সেই অশিক্ষিত চাড্ডিরা গদা হাতে না দাঁড়ালে মুক্তমনা ব্লগারদের মত আপনাদের জীবনটাও যে ষোল আনাই মিছে এটা ভুলবেন না৷

বর্তমান যুগের স্বঘোষিত লিবারালরা দেশের শত্রুদের মায়াবী সৈন্য

বর্তমান যুগের স্বঘোষিত লিবারালরা মারিচ-এর মত সোনার হরিণ সেজে মুক্তমনা হিন্দুদের বিভ্রান্ত করছে৷ ঘরে মুক্ত বাতাস আমদানী করতে হলে জানলা দরজা খুলে রাখাই যথেষ্ট, কিন্তু উদারতার নামে এরা ঘরের দেওয়ালগুলোকেই ভেঙে ফেলার চক্রান্ত করে চলেছে৷ ভারতীয়ত্ব বা হিন্দুত্বের পিলার গুলোকে ইনট্যাক্ট রাখতে না পারলে ভারতের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যাবে৷ এর উদাহরণ হল আফগানিস্তান থেকে শুরু করে বাংলাদেশ৷ ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যে দেশগুলোর জন্ম৷ হিন্দুর শক্তি যখন যেখানে কমজোর হয়েছে তখন সেই মাটি ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে৷ এটা ঐতিহাসিক সত্য৷ দেশকে ভাঙার জন্য মোল্লারা করেছে ডাইরেক্ট অ্যাকশন৷ আর দেশের তথাকথিত লিবারালরা করে চলেছে ইনডাইরেক্ট অ্যাকশন! তারা ভারতের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করার জন্য মিছরির ছুরি চালিয়ে চলেছে৷ এরা দেশের শত্রুদের মায়াবী সৈন্য৷ হিন্দুর সহজাত উদার মানসিকতাকে এনক্যাশ করে হিন্দুকে মূর্খের স্বর্গে টেনে নিয়ে চলেছে এরা৷ এরা যে যুক্তির কথা বলে সেগুলো যুক্তি নয়, সেগুলোকে বলা হয় 'ফ্যালাসি'! এদের যুক্তির নমুনা হচ্ছে 'রবীন্দ্রনাথের দাড়ি আছে, আবার রামছাগলেরও দাড়ি আছে - তাই রবীন্দ্রনাথ রামছা....!!' এটা ওদের যুক্তিবোধের অভাব নয়, এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত৷ এই কাজ করে যাওয়ার বিনিময়ে কোন না কোন রূপে এরা ইনসেন্টিভ পাচ্ছে৷ দাদরি কান্ডের পরে সম্পূর্ণ organised way তে যেভাবে পুরস্কার ফেরত দেওয়ার হিড়িক উঠেছে, তাতে এটা আজ স্পষ্ট৷ কলবর্গীর জন্য এদের গলা ফাটে কিন্তু তসলিমা, হুমায়ূন আজাদদের সময় এরা বাকরূদ্ধ! এরা গুজরাট ২০০২ দেখতে পায় কিন্তু গোধরা কান্ড দেখতে পায় না! এরা দাদরি কান্ডে ব্যথিত হয়, কিন্তু জুরানপুরের ঘটনায় এদের উদার মন কেঁদে ওঠে না৷ ভারতে তথাকথিত সংখ্যালঘু মুসলমানদের জন্য এদের হৃদয় কাতর হলেও কাশ্মীরের হিন্দু বিতাড়ন, বাংলাদেশে হিন্দুর উপরে নির্যাতন এদের উদার মনকে স্পর্শ করে না৷ এই দ্বিচারিতা নিয়ে কেউ যদি নিজেকে উদার বা লিবারাল বলে দাবি করে, তাকে স্বীকৃতি দেওয়া কি বাঙালী হিন্দুর যুক্তিবোধ এবং বুদ্ধিমত্তার উপরে প্রশ্নচিহ্ন লাগিয়ে দেয় না? এই লিবারালরা সেকু, মাকু ইত্যাদি বিভিন্ন রূপে ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনার আমার আশেপাশে৷ এদেরকে চিনে নিন৷ এরা বুদ্ধিহীন নয়৷ এরা ধূর্ত শিয়ালের মত ভারতের শত্রুদের উচ্ছিষ্টভোজী৷ এরা আপনার আমার মত চট্যোপাধ্যায়, বন্দ্যোপাধ্যায় উপাধি ধারণ করে আমাদের সমাজকে উঁইপোকার মত ভিতর থেকে খোকলা করে চলেছে৷ এদের মুখোশটা সবার সামনে খুলে দিয়ে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে না দিতে পারলে এই দেশটাকে বাঁচানো অসম্ভব৷

ধান্দাবাজদের অস্তিত্ব আগেও ছিল, আজও আছে আর ভবিষ্যতেও থাকবে

একজন সেকু-মাকুর বাড়িতে ডাকাত পড়লে কি তিনি তাদেরকে প্রতিরোধ করবেন? প্রয়োজনে হাতে অস্ত্র তুলে নেবেন? না কি লিবারাল হিসাবে তাদেরকে সাদর অভ্যর্থনা জানাবেন আর বিনা বাধায় বাড়ির মা-বোনদের অপমান করতে দেবেন? বাড়ির দরজায় তালা না লাগানো আদর্শ স্থিতি৷ কিন্তু যতদিন চোর ডাকাতের অস্তিত্ব আছে, বাড়িতে তালা লাগানোটাই বাস্তব বোধের পরিচায়ক৷ সেকু-মাকুরা ব্যক্তি জীবনে বাস্তবকে মেনে চলেন কিন্তু দেশ, সমাজ, জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় বাস্তবকে অস্বীকার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ এই দ্বিচারিতার মাধ্যমে তারা কাদের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছেন? অবশ্য তাদের প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই৷ কারণ ধান্দাবাজদের অস্তিত্ব আগেও ছিল, আজও আছে আর ভবিষ্যতেও থাকবে৷ কিন্তু বাঙালী সমাজ তাদেরকে চিনতে এত দেরী করল কেন সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন৷

It is time to do or die

জীবনে কোনদিন এত খিস্তি খাই নি৷ কেউ সামান্য কটু কথা বললে চোখে জল আসতো৷ আশ্চর্যের বিষয় ফেসবুকের লেখাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন গ্রুপে যতই খিস্তি খাচ্ছি, ততই উৎসাহ বাড়ছে! এতদিনে মনে হচ্ছে সেকু-মাকু নামধারী দেশের শত্রুদের পাকা ধানে মই পড়ে গেছে৷ ওদের জামা কাপড় খুলে যাচ্ছে একটা একটা করে৷ উলঙ্গ হতে আর বেশী সময় লাগবে না৷ গায়ে এতটাই জ্বালা ধরে যাচ্ছে যে যুক্তির ধারে কাছে না গিয়ে গলাগালি দিয়ে চুপ করিয়ে দিতে চাইছে তথাকথিত যুক্তিবাদী, শিক্ষিত, উদারতাবাদীরা৷

মিত্রোঁ সর্বহারার গান গেয়ে প্রচুর কামিয়েছো৷ এখন মা-মাটি-মানুষের গান গেয়ে কামাচ্ছো! কিন্তু মনে রেখো, সময় এসেছে তোমাদের প্রকৃত সর্বহারা হয়ে যাওয়ার৷ অন্তর্বাসটাও শরীরে রাখতে দেব না - কথা দিলাম৷ অবশ্য ঠেলায় পড়লে চাড্ডি পরিধান করে নিতে তোমরা এক মুহূর্তও দেরী করবে না সেটা আমি ভালো করেই জানি৷ চাড্ডি পরে নিলেও অন্তর্বাস ছাড়াই সেটা পরতে হবে কিন্তু৷ কারণ তোমাদের 'অন্দর' টা সবার সামনে প্রকাশিত হওয়াটা খুবই দরকার৷ সেটা আমরা করছি, করবো৷

মাঝে মাঝে দেখছি পুলিশের ভয়ও দেখাচ্ছে তারা৷ ওরা সম্ভবত জানে না, আমরা জেলকে তীর্থক্ষেত্র মনে করি৷ আমরা activist ৷ ওদের মত ফেসবুকে বাঘ মারি না৷ আমরা জানি, একটা দেবতনু জেলে গেলে দশটা দেবতনু জন্ম নেবে৷ সারা জীবন জেলে থাকতেও আমার আপত্তি নেই৷ যুদ্ধ যখন শুরু হয়ে গেছে, তখন শত্রু যে অস্ত্র ব্যবহার করবে, নিশ্চিতভাবে আমি তার চেয়েও শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবো না৷ শত্রু শালীনতা, ভদ্রতার সীমার মধ্যে থাকলে আমিও তা ই থাকবো৷ কিন্তু তারা সেই সীমা অতিক্রম করলে আমিও শালীনতা, ভদ্রতার ইমেজ ধুয়ে জল খাবো না৷ শত্রু যখন নির্লজ্জ, আমার সামনে আদর্শ তখন নগ্ন 'মা কালী'৷ এই নির্ণায়ক লড়াইয়ে যোদ্ধাদের মনে কোন দ্বিধা ও দ্বন্দ্বের স্থান থাকতেই পারে না৷ It is time to do or die.

Thursday, September 24, 2015

আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আইনতঃ না পেলে আমরা তা ছিনিয়ে নেব

তাদের প্রথম পরিচয় - তারা মুসলমান৷ তাই প্রথমে কৌমের স্বার্থ দেখতে হবে৷ বস্তুত, প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কৌমের স্বার্থই দেখতে হবে৷ মুসলমান পরিচয় বাদে আর যা যা পরিচয়, সবই সেই স্বার্থসিদ্ধির কথা মাথায় রেখে৷ লক্ষ এক - দারুল ইসলাম, তার জন্য প্রয়োজনে মুসলিম লীগকে অস্তিত্বহীন করে দিতে হবে, MIM কে গালি দিতে হবে এমনকি বিজেপির ঝান্ডা ধরতে হবে৷ যার রঙ যাই হোক না কেন, কৌমের উদ্দেশ্য ব্যহত হলে কিন্তু সব শিয়ালের এক রা!

গরু খাওয়া কি মুসলমানদের ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে? নবী সাহেব কোনদিন গরু খেয়েছিলেন(যেহেতু মক্কা বা মদীনা যে অঞ্চলে অবস্থিত, সেখানে গরু সহজে পাওয়া যায় না)? কোরানে কোথাও লেখা আছে যে, কোরবানীতে গরুর পরিবর্তে খাসী কাটলে আল্লা যারপরনায় অসন্তুষ্ট হবেন? কিন্তু গরু কাটতেই হবে৷ কারণ, এদেশে কাফের হিন্দুরা গরুকে বিশেষ শ্রদ্ধা ও সম্মান করে থাকে৷ তাই গরু কাটতে হবে৷ প্রকাশ্যে কাটতে হবে৷ তারা জানে, আড়াই প্যাঁচ দিয়ে ফলে রাখলে বেচারা গরুগুলোর যত না কষ্ট হয়, তার চেয়ে বেশী যন্ত্রণা হবে কাফের হিন্দুগুলোর হৃদয়ে৷ ভারতে মুসলমানদের গরু কাটার বাধ্যবাধকতাটা এখানেই৷ ভাবটা এই - আমরা তোমাদের শ্রদ্ধার বিষয়গুলোতে আঘাত করতেই থাকবো, তোমরা কি ছিড়বে ছিড়ে নাও৷

আমাদের লড়াইটা গরুকে বাঁচানোর নয়, আমাদের আত্মসম্মান বাঁচানোর জন্য৷ একসাথে পাশাপাশি বসবাস করার সদিচ্ছা থাকলে একে অন্যের বিশ্বাসকে মর্যাদা দিতে হবে৷ একদিকে বারাবনীতে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে কোরান ছিড়ে ফেললে তোমরা থানা ভাঙচুর করবে, অন্য দিকে জয়নগরের রাণাঘাটাতে মন্দিরের পাশে গরুর মাংসের স্টল লাগাবে - এ হতে পারে না৷ তাদের বিশ্বাসটা মূল্যবান, আর অন্যদের বিশ্বাসের কোন মর্যাদা নেই - এ কেমন কথা?

এই গা-জোয়ারি সভ্য সমাজে চলতে পারে না৷ এই সহজ সত্যটা বোঝার মানসিকতা না থাকলে ঘাড়ে হাত দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় আছে? এখন এই ঘাড়ে হাত দেওয়ার কাজটা হল রাষ্ট্রের৷ কিন্তু ভারতের রাজনৈতিক কালচারে এটা অসম্ভব৷ কারণ, যারা দেশ চালায় তাদের হাত এই সমস্ত nuisance value র ঘাড়ের বদলে সব সময় মাথার উপরেই থাকে৷ তাই প্রথমে নেতা মন্ত্রীদের হুঁসিয়ারী দিতে হবে, কাজ না হলে ঘাড়ে হাত দেওয়ার কাজটা নিজেদের হাতে তুলে নিতে হবে৷ নীরবে সহ্য করে যাওয়ার অর্থ আত্মহত্যা করা৷ কিন্তু আমাদের আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে৷ আর এই অধিকার আইনতঃ না পেলে আমরা তা ছিনিয়ে নেব৷

আমি জানি, আমার জেলে যাওয়ার সময় ক্রমশঃ এগিয়ে আসছে৷ কিন্তু এড়িয়ে গেলে ভারতের মাটিতে অসংখ্য কাশ্মীর সৃষ্টি হবে, আবার ভারত ভাগ হবে৷ তাই সমুদ্র মন্থন হোক৷ শেষে অমৃত উঠুক৷ সেই অমৃত পান করে বিশ্বসভায় শ্রেষ্ঠ আসনে চিরকাল আসীন থাকুক ভারতবর্ষ৷ কিন্তু তার আগে যে হলাহল উঠবে, তা ধারণ করার জন্য যারা এগিয়ে আসবেন, আমিও তাদের একজন - এটাই আমার গর্ব৷

Wednesday, September 23, 2015

দাদা, কবে হিন্দুর সমস্যার সমাধান হবে?

একবার এক ভদ্রলোক সাতসকালে পুকুরের পাড়ে দাড়িয়ে দাঁতন করছিলেন৷ সেই সময় পুকুরের পার্শ্ববর্তী রাস্তা দিয়ে অন্য এক ব্যক্তি যাচ্ছিলেন৷ দ্বিতীয় ব্যক্তিটি প্রথম ব্যক্তিকে দেখে দাঁড়ালেন৷

জিজ্ঞাসা করলেন,'দাদা, সমীর বাবুর বাড়ি যেতে কত সময় লাগবে বলতে পারেন?'

প্রথম ব্যক্তি কোন উত্তর না দিয়ে আপন মনে দাঁতন করতে লাগলেন৷

দ্বিতীয় ব্যক্তি আবার একই প্রশ্ন করলেন কিন্তু প্রথম ব্যক্তিটি যথারীতি কোন উত্তর দিলেন না!

বিরক্ত হয়ে দ্বিতীয় ব্যক্তিটি সামনের দিকে হাটতে শুরু করলেন৷

হাটতে শুরু করার করার সাথে সাথে প্রথম ব্যক্তিটি ওই দ্বিতীয় ব্যক্তিকে ডেকে বললেন, '৫ মিনিট লাগবে দাদা৷'

দ্বিতীয় ব্যক্তি বললেন,'আপনি তো আজব মানুষ মশাই৷ যখন ডেকে জিজ্ঞাসা করলাম, তখন কোন উত্তর দিলেন না৷ আর হাটা শুরু করতেই পিছন থেকে ডেকে বলছেন ৫ মিনিট!'

প্রথম ব্যক্তিটি তখন বললেন, 'যখন আমাকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, তখন আপনি দাড়িয়ে ছিলেন, তাই তখন উত্তর দিলে বলতে হত যে আপনি কোনদিনই পৌঁছাতে পারবেন না৷ কারন স্থির বস্তুর কোথাও পৌঁছানের কোন প্রশ্নই নেই৷ কিন্তু হাটতে শুরু করার পরে আপনার হাটার গতি দেখে হিসাব করে বলতে পারলাম ৫ মিনিট লাগবে৷'

আমাকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন, 'দাদা, কবে হিন্দুর সমস্যার সমাধান হবে?

আমার উত্তর, 'আপনার সাহস, সক্রিয়তা এবং আকুতির মাত্রার উপরে সেটা নির্ভর করছে৷'

LIC in a new form

প্রায় ১৫বছর আগের কথা৷ আমি তখন আসামে৷ একজন আর্মি ইন্টালিজেন্স অফিসার মাঝে মাঝে দেখা করতে আসতেন৷ আলোচনা প্রসঙ্গে উনি একদিন বললেন, আসামে ISI তার নেটওয়ার্ক ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে দিয়েছে৷ কিন্তু হিন্দুদের উপরে সংগঠিতভাবে কোন আক্রমণ যাতে না হয়, সে ব্যাপারে তারা কঠোর নির্দেশ দিয়েছে তাদের এজেন্টদের৷ তাদের পরিকলপনা, আসাম দখল করতে আর ডাইরেক্ট অ্যাকশন করার দরকার নেই৷ সেখানে হিন্দুদের উপরে বড় ধরণের কোন আঘাত হলে সারা ভারতের হিন্দুরা সচেতন এবং সতর্ক হয়ে যাবে৷ এতে তাদের বৃহত্তর পরিকল্পনা রূপায়নের কাজ কঠিন হয়ে যাবে৷ তাই আসাম দখল হবে, কিন্তু তার আঁচ বেশী লোকের গায়ে লাগবে না, কোন মিডিয়ায় প্রচার হবে না, লোকেরা গুরুত্ব দেবে না - সেই রকম একটা রণকৌশল তৈরী করে তার বাস্তবায়নের কাজ শুরু করে দিয়েছে ISI৷

এই প্রোজেক্টের নাম দিয়েছে LIC! LOW INTENSITY CONFLICTS মানে ছোট ছোট সঙ্ঘর্ষ - ডাকাতি, রেপ, গণধোলাই, বাজার লুঠ ইত্যাদি৷ যেভাবেই হোক ঘটনাগুলোকে ছোট এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে, যার প্রভাব ছোট এলাকার মধ্যে প্রবল ভাবে পড়বে৷ এই সব ঘটনার খবর বেশী দূর পর্যন্ত পৌঁছাবে না৷ যদিও পৌঁছায়, হিন্দুরা সেগুলোকে Law & order problem বা আইন শৃঙ্খলার অবনতি বলে বিশেষ গুরুত্ব দেবে না৷ মোটকথা, বৃহত্তর বিপদের কথা কোনভাবেই আঁচ করবে না এবং কেউ বুঝানোর চেষ্টা করলে বিশ্বাসও করবে না৷ কিন্তু যারা ভুক্তভোগী, তাদেরকে এবং এলাকার বাকী হিন্দুদেরকে স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেওয়া হবে যে, এই ডাকাতি কিংবা রেপ হল ইসলামিক সন্ত্রাস৷ এখানেই এর শেষ নয়৷ এখানে থাকলে এধরণের ঘটনা বার বার ঘটবে৷ তাই মানে মানে এলাকা ছেড়ে পালাও৷ তোমার এই সম্পত্তি কিনে নেওয়ার লোক আছে, প্রয়োজনে বেশী দাম পাবে৷ সোজা কথায় পরিকলপনা হল আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ গ্রামের দখল নেওয়া৷

প্রথমত, এই একই পরিকল্পনার ছাপ কি আমরা পশ্চিমবাংলার বুকে রূপায়িত হতে দেখতে পাচ্ছি? মল্লিকপুর, উস্তি, জুরানপুর, হাঁসখালি, পঞ্চগ্রাম, বিকি হাকোলা, চন্ডিপুর, নৈহাটি, গয়েশপুর, বাঁশবেড়িয়া, টিয়া, মিয়া - একের পর এক সন্ত্রাসের ঘটনা কিসের ইঙ্গিত বহন করছে? কামদুনী থেকে শুরু করে রূপনগর-তারানগর, নোরিট, নির্মাণ দত্তপাড়ার ধর্ষণের ঘটনা কি বিচ্ছিন্ন ঘটনারূপেই থেকে যায় নি? হিন্দু সংহতি না থাকলে তো বেশীরভাগ ঘটনার খবরই কেউ জানতে পারতো না!

দ্বিতীয়ত, এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করছে কারা? পাকিস্তান আর বাংলাদেশ লোক পাঠাচ্ছে? যাদেরকে পাঠাচ্ছে, তাদেরকে এলাকার পথঘাট চেনাচ্ছে কারা? ঘরভাড়া করে দিচ্ছে কারা? পুলিশ-গোয়েন্দাদের থেকে আড়াল করে রাখছে কারা? সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র মজুত করার জায়গা দিচ্ছে কারা? মল্লিকপুর থেকে মিয়া - হিন্দুদের উপরে যারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তারা কি পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ থেকে আমদানী হওয়া সন্ত্রাসবাদী? এই সমস্ত প্রশ্ন কিন্তু অনেকেই বিব্রত হবেন৷ কারণ শাক দিয়ে মাছ ঢাকা দেওয়া আর তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না৷

এইভাবেই দুই ২৪ পরগণা, নদীয়া, মালদা, মুর্শিদাবাদ, উঃ দিনাজপুর, বীরভূম - জেলাগুলিতে জনসংখ্যার ভারসাম্যের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়ে গেছে৷ ওই জেলাগুলোতে প্রতিদিন হিন্দুরা সব ধরণের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷ হিন্দুরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র সরে যাচ্ছে৷ বাকী যে জায়গার মুসলমানরা সংখ্যায় এবং শক্তিতে critical mass এ পৌঁছাতে পারে নি, তারা হিন্দুদের সঙ্গে পীরিত করে চলছে৷ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঝান্ডা উড়িয়ে রেখেছে সযত্নে৷ তারা যে অপেক্ষা করছে ২৫% এর বেঞ্চমার্ক ছোঁয়ার জন্য, সেটা সেখানকার হিন্দুরা বুঝতে পারছে না৷ যখন বুঝবে তখন সময় পেরিয়ে যাবে৷

বন্ধু প্রত্যুষ আর আমি কুচবিহার স্টেশনের বাইরে খিচুড়ি খাচ্ছিলাম৷ গরম খিচুড়ি, খাওয়া যাচ্ছে না কিছুতেই৷ হঠাৎ দেখলাম প্রত্যুষ কিন্তু প্রায় শেষ করে ফেলেছে৷ ও আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে বলল,'আপনি খিচুড়ি খাওয়ার টেকনিক জানেন না৷ গরম খিচুড়ি সাইড থেকে খেতে খেতে মাঝখানে আসতে হয়৷' সত্যিই আমি জানতাম না, অনেকেই জানেন না৷ তবে মুসলমানরা যে গরম খিচুড়ি খাওয়ার টেকনিকটা ভালো জানে, তা পরিস্থিতি দেখেই বোঝা যাচ্ছে!

Friday, April 10, 2015

ইউনিটি

ইউনিটির থেকে বড় কথা হল লাইন অফ থিংকিং আর লাইন অফ অ্যাকশান৷ ইউনিটি রাখতে গিয়ে একটা জগদ্দল পাথরের সাথে নিজেদের যুক্ত করে রাখলে আমরাই স্থবির হয়ে পড়বো কি না সেটাও মাথায় রাখতে হবে৷ ভাই সংগঠন করে বড় হয়ে তারপরে লড়াই করবো, এই মানসিকতায় আমি বিশ্বাস করি না৷ মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদীয়া, দুই ২৪ পরগণার হিন্দুরা যদি ২০ বছর আগেই লড়াই শুরু করতো তাহলে চিত্রটা অন্যরকম হতো৷ কিন্তু সেদিন কেউ তাদেরকে লড়াই করতে বলে নি, বলেছে সংগঠন করে শক্তিশালী হতে৷ কিন্তু সেই পথে হাটার পরিণাম স্বরূপ আজকের হিন্দু সেদিনের তুলনায় অনেক বেশী দুর্বল, আর মুসলমানেরা ধনে-জনে অনেক বেশী সমৃদ্ধশালী ও শক্তিশালী৷ আরও ১০ বছর ধরে সংগঠন করে শক্তি অর্জন করে এই আগ্রাসনকে প্রতিরোধ করার কথা চিন্তা করলে বাংলার যে পরিস্থিতি দাঁড়াবে, আমি সেই চিত্র দেখতে চাই না৷ তাই আজকে বাংলার হিন্দুর কানে একটাই মন্ত্র দিতে চাই - সংঘর্ষ৷ সবাই নিজের নিজের ক্ষেত্রে কাজ করুক, কোন আপত্তি নেই৷ তাদের গঠনমূলক কাজের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে এবং সেই কাজের প্রয়োজনীয়তাও আছে বলে আমি স্বীকার করি৷ কিন্তু উপস্থিত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার পন্থারূপে আজকে শুধুমাত্র সংগঠন করে, সংঘর্ষকে এড়িয়ে গিয়ে, ভবিষ্যতে লড়াই করার মিথ্যাস্বপ্ন দেখিয়ে দল বাড়ানোর মানসিকতাকে আমি কখনোই মেনে নিতে পারবো না৷ আর সত্যি সত্যিই যদি ১০ বছর পরে লড়াই হয়ও, সে লড়াইয়ের পরিণাম হবে নিশ্চিত পরাজয়৷

মডারেট মুসলিম

আজকাল অনেক মুক্তমনা হিন্দু আমাদেরকে 'মডারেট মুসলিম'- এর কল্পকাহিনী শুনাচ্ছেন৷ এরা মূর্খই শুধু নয়, এরা সেই বিশ্বাসঘাতকদের উত্তরসূরী, যারা 'হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই' এর গান শুনিয়ে শুনিয়ে হিন্দু সমাজকে বিভ্রান্ত করে পরোক্ষে ভারতভাগে মদত করেছে, লাখ লাখ হিন্দুকে মুসলিম ধর্মান্ধতার যূপকাষ্ঠে বলি দিয়েছে, হাজার হাজার হিন্দু মহিলার সম্ভ্রমকে মুসলমান জেহাদীদের হাতে উপঢৌকন দিয়েছে, লাখ লাখ হিন্দুর কপালে উদ্বাস্তুর কলঙ্কচিহ্ন এঁকে দিয়েছে৷ এরা না পড়েছে কোরাণ, না পড়েছে হাদীস৷ কিন্তু এরা স্বপ্নাদেশে জানতে পেরেছে যে গীতায় যা লেখা আছে কোরাণেও তা ই লেখা আছে! এরা কোন এক অজানা উপায়ে উপলব্ধি করেছে যে সনাতন হিন্দুর দর্শন আর ইসলামের দর্শনের সারমর্ম একই!

অদ্বৈতবাদ হিন্দু দর্শনের core৷ কিন্তু পাশাপাশি দ্বৈতবাদও স্বীকৃত৷ একং সদ্ বিপ্রা বহুধা বদন্তি৷ মানে সত্য এক হলেও জ্ঞানীরা তাকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেন৷ তাই ভারতে নিরাকার ব্রহ্মের উপাসনা থেকে শুরু করে সাপ এমনকি গাছের পূজাকেও সমান চোখে দেখা হয়৷ তেত্রিশ কোটি দেবতা, মানুষ (কুমারী পূজা), পাথর, মাটি, জীবজন্তু, গাছ-গাছড়া - যা ই পূজা করুক না কেন, হিন্দু সবের মধ্য সেই একই সত্যের অস্তিত্বকে উপলব্ধি করে৷ তাই তারা ভাবে আল্লা ও গড্ও সেই সত্যেরই প্রকাশ৷ তাই হিন্দু আল্লা ও গড্ এর উপাসনাকেও ঈশ্বরের উপাসনা মনে করেই শ্রদ্ধা করে৷ এটা সহিষ্ণুতা নয়, শ্রদ্ধা৷ এই কারণেই হিন্দু দর্শন বিশ্বজনীন৷

কিন্তু ইসলামের দর্শনের বিকাশ এই উচ্চতায় কোনদিন পৌঁছায় নি৷ আর পৌঁছাতে পারবেও না৷ কারণ নবী নিজেই বলে গেছেন যে কোরাণ হচ্ছে স্বয়ং আল্লার মুখ নিঃসৃত বাণী৷ এই বাণী শুনেছেন নবী নিজে৷ এবং মহম্মদের পরে আর কোন পয়গম্বর অর্থাৎ আল্লার বার্তাবাহী জন্মাবেন না৷ কারণ তিনিই সর্বশেষ পয়গম্বর৷ তাই যেহেতু পরে আল্লা যদি কোরাণের modification করেন বা যুগোপযোগী নতুন কোন নির্দেশ দেন, তা মানুষের কাছে পৌঁছাবে কি করে? তাই মুসলমানদের কাছে কোরাণের কথাই সর্বকালীন মান্য৷ এর পরে কিছু থাকতে পারে না৷ তাই কোরাণের মাধ্যমে আল্লা যখন বলেন, "আল্লাহ কেবল শিরক্ (অংশিদারী) এর পাপকেই মাফ করেন না৷ এছাড়া আর যত পাপ আছে তা - যার জন্য ইচ্ছা মাফ করে দেন৷ যে লোক আল্লাহ-র সাথে অন্য কাউকে শরীক করলো সে তো বড় মিথ্যা রচনা করলো, এবং বড় কঠিন গুনাহের কাজ করলো"(সুরা ৪, আয়াত ৯৫), তখন বিশ্বের সমস্ত অমুসলমানদেরকে পাপী এবং আল্লার ক্ষমার অযোগ্য নিকৃষ্ট শ্রেণির বলে মনে করা ছাড়া মুসলমানদের সামনে কোন বিকল্প থাকে না৷ আল্লার পাশে অন্য কিছুকে ঈশ্বরের আসনে বসালেই সে ক্ষমার অযোগ্য! কোরাণের ছত্রে ছত্রে আল্লা যখন কাফির অর্থাৎ অমুসলমানদের শাস্তি দেওয়া, হত্যা করাকে মোমিন অর্থাৎ মুসলমানদের কর্তব্য বলে ঘোষণা করেন, তখন মুসলমানদের সেই নির্দেশকে শিরোধার্য করা ছাড়া পুণ্যলাভের অন্য কোন পথ থাকে না৷

তাই হিন্দুর দর্শন আর ইসলামের দর্শনের সারমর্ম মোটেই এক নয়, বরং ঠিক বিপরীত৷ হিন্দু দর্শন শেখায় অন্যান্য মতকে শ্রদ্ধা করতে৷ সেখানে ইসলামের শিক্ষা হল অন্যদেরকে শাস্তি দাও, হত্যা কর৷ এখন কোরাণ হাদীসে যদি খারাপ কিছু লেখাও থাকে, হিন্দু শাস্ত্রেও তো অনেক কিছু লেখা আছে যা গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাহলে ২০১৫ সালে, আজকে সেই সব শাস্ত্রবাক্য ক'জন মেনে চলে? এই প্রশ্ন নিশ্চই কোন মুক্তমনা করবেন৷ তাদের মনে রাখা উচিত, হিন্দুর শাস্ত্র না মানার অধিকার, এমনকি প্রকাশ্যে বিরোধিতা করার স্বাধীনতাও হিন্দু শাস্ত্রস্বীকৃত বলেই আপনারা ভারতের বুকে নির্ভয়ে বেঁচে আছেন৷ পক্ষান্তরে যারাই আল্লার নির্দেশ অমান্য করার দুঃসাহস দেখাবে আল্লার বাণী অনুসারে তারা হয়ে যাবেন মুর্তাদ অথবা মুনাফিক৷ এই মুর্তাদ এবং মুনাফিকদের প্রাপ্য হল কঠোর থেকে কঠোর তর শাস্তি৷ এর বাস্তব প্রয়োগ আমরা তসলিমা, হুমায়ুন আজাদের ক্ষেত্রে হতে দেখেছি৷ তার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হল ওয়াশিকুর রহমান বাবুর নৃশংস হত্যাকান্ড৷
তাহলে মডারেট কখনও মুসলিম হতে পারে না, আর কোন মুসলিম মডারেট হওয়ার চেষ্টা করলেই সে আর মুসলিম থাকতে পারে না, সে হয়ে যায় মুর্তাদ অথবা মুনাফিক৷ বিখ্যাত ইসলামিক স্কলার জাকির নাইক সাহেবের কথায় - মডারেট মুসলিম বলে কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই, আছে শুধু practing, partly practicing আর non practicing মুসলিমের অস্তিত্ব৷ এই partly আর non practicing মুসলিমদের practicing মুসলিমে রূপান্তর শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা৷

Friday, March 20, 2015

সঙ্ঘর্ষই হোক আজকের যুগধর্ম

আমাদের লড়াই হিন্দু ও মুসলমান - এই দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে নিছক গোষ্ঠিদ্বন্দ্ব নয়৷ এ লড়াই আমার আপনার মাটি - বেটি - রুটি বাঁচানোর লড়াই৷ এ লড়াই ভারতের অখন্ডতা বজায় রাখার লড়াই৷ এ লড়াই ভারতের বিশ্বজনীন মূল্যবোধকে বাঁচিয়ে রাখার লড়াই৷ এ লড়াই আমাদের নিজেদের ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার লড়াই৷ এ লড়াই আমার মূর্তি পূজোর অধিকার রক্ষার লড়াই৷ আবার এ লড়াই আমার নাস্তিক হওয়ার অধিকার রক্ষার লড়াই৷ এ লড়াই ভারতের বৈচিত্র্যকে রক্ষা করার লড়াই ৷ রাম - কৃষ্ণ - শঙ্কর - বুদ্ধের ভারতকে বাঁচাতে হলে এ লড়াই লড়তে হবে৷ স্বামীজী - আচার্য্য প্রণবানন্দের ভারতকে বাঁচাতে হলে এ লড়াই লড়তে হবে৷ আপনার আমার মেয়েকে লাভ জেহাদের হাত থেকে বাঁচাতে হলে এ লড়াই লড়তে হবে৷ তাকে কালো বোরখার অন্ধকারে জীবন কাটানোর হাত থেকে বাঁচাতে হলে এ লড়াই লড়তে হবে৷ ধর্মান্ধ, অসহিষ্ণু, মধ্যযুগীয়, অত্যাচারী, নিষ্ঠুর ইসলামের হাত থেকে বিশ্ব মানবতাকে রক্ষা করার জন্য নির্ণায়ক সঙ্ঘর্ষই হোক আজকের যুগধর্ম৷

Tuesday, March 17, 2015

ধর্ম পালনের থেকে আজ ধর্মের সংরক্ষণকে প্রাথমিকতা দিতে হবে

পুকুরে মাছেরা যখন একসাথে থাকে তখন কয়েকটি আগ্রাসী প্রকৃতির মাছ বাকী মাছেদের আক্রমণ করে মেরে ফেলে৷ কে কাকে মারবে, সবক্ষেত্রে তা মাছের আকারের উপরে নির্ভর করে না৷ তা মূলতঃ নির্ভর করে মাছের প্রকৃতি বা স্বভাবের উপরে৷ উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, বোয়াল বা ভেটকী মাছের কথা৷ কোন পুকুরে বোয়াল অথবা ভেটকী মাছ থাকলে সেই পুকুরে অন্য কোন প্রজাতির মাছ থাকতে পারে না৷ এক্ষেত্রে বোয়াল এবং ভেটকী মাছ অন্য মাছদের আক্রমণ করে এবং খেয়ে ফেলে৷ আবার তেলাপিয়া মাছের বংশবৃদ্ধির হার এত বেশী যে তাদের ভীড়ের চাপে পুকুরে অন্য মাছের স্থান এবং খাদ্য-দুইয়েরই অভাব হয়ে পড়ে৷ সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার মিষ্টি জলের পুকুরে কাঠকৈ নামের মাছ পাওয়া যায়৷ এরা আকারে ছোট কিন্তু দলবদ্ধ এবং হিংস্র৷ এরা দল বেঁধে অনেক বড় বড় মাছকে শিকার করে৷ পুকুরে এই তিন ধরণের মাছের যে কোন এক প্রজাতির উপস্থিতিই বাকী সব প্রজাতির মাছের অস্তিত্ব শেষ করার জন্য যথেষ্ট৷ আর যদি এরকম কোন মাছ থাকে, যার আকার বড়, যারা দলবদ্ধ, হিংস্র ও আগ্রাসী তাহলে তো আর কথাই নেই৷

এখন অনেকে বলবেন মাছ তো মাছই, সব মাছই সমান, যারা মাছে মাছে পার্থক্য করে তারা অজ্ঞ৷ তাদের এই কথা এক অর্থে সঠিক হলেও তাদের কথা শুনে কেউ যদি একই পুকুরে সাধারণ মাছের সাথে সাথে বোয়াল, ভেটকী ইত্যাদি মাছ চাষ করেন, তাহলে তিনি সর্বস্বান্ত হবেন একথা বলাই বাহুল্য৷ ঠিক তেমন ভাবে যারা বলেন মানুষ তো মানুষই, সব মানুষ সমান, মানুষে মানুষে বিভেদ করা উচিত নয় - তাদের কথা আপাত দৃষ্টিতে সত্যি এবং আকর্ষণীয় মনে হলেও মোটেই বাস্তব সম্মত নয়৷ কারণ সবাই মানুষ হলেও আপনি কি আপনার বাড়ীর ভিতরে আপনার পরিবারের সদস্যদের সাথে একজন চোর, একজন সিরিয়াল কিলার এবং একজন দাগী ধর্ষণকারীকে একসাথে বসবাস করার অনুমতি দেবেন? যদি দেন তাহলে তার পরিণতি কি হবে, তা আশা করি বলে দিতে হবে না৷

মানুষ সবাই সমান হলেও আবার সবাই সমান নয়৷ বাস্তব জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং স্বচ্ছ ও পূর্বাগ্রহ (bias/pre-motivation) বিহীন দৃষ্টি দিয়ে দেখলে এই পার্থক্য বোঝা যায়৷ বস্তুবাদী(materialistic) অথবা আধ্যাত্মিক(spiritual) - যে কোন ভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, সব কিছুর মূলতত্ত্ব এক৷ সেই দৃষ্টিতে একটি সূস্থ কুকুর আর একটি পাগল কুকুরের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ কিন্তু তাই বলে কি পাগল কুকুরের সাথে গলাগলি করা কান্ডজ্ঞানের পরিচায়ক হবে? কেউ যদি তা করতে চায় তাহলে সে খালি নিজেরই নয়, আরও অনেকের বিপদ ডেকে আনবে৷

এখন আমাদের সমাজের মধ্যেই কিছু লোকের মনে হচ্ছে যে আমরাই শ্রেষ্ঠ, বাকীরা নিকৃষ্ট৷ জড়, প্রকৃতি, নারী - সবই আমাদের ভোগের জন্য৷ আমরা যা বিশ্বাস করি, সেটাই সঠিক এবং সবাইকে তা ই বিশ্বাস করতে হবে৷ আমরা যে পথে চলতে চাই বাকীদেরকেও সেই পথেই চলতে হবে৷ অন্যথা হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অনন্ত কাল ধরে যুদ্ধ করবো৷ তাদের সবাইকে হত্যা করবো৷ তাদের সম্পত্তি লুঠ করবো৷ তাদের মহিলাদের ধর্ষণ করবো, দাসী বানিয়ে খোলা বাজারে নিলাম করবো৷ এটাই পূণ্যের কাজ৷ এটাই স্বর্গ প্রাপ্তির উপায়৷ এটাই ঈশ্বর নির্দিষ্ট পবিত্র কর্তব্য৷ এই কাজ নিষ্ঠার সাথে করলে ঈশ্বর খুশী হবেন এবং আশির্বাদ করবেন৷ এভবেই পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে৷ এ হল ইসলামের মতাদর্শ ৷

পাশাপাশি কিছু লোক মনে করে সবারই চিন্তা-ভাবনা, বিশ্বাস, অভিব্যক্তির স্বাধীনতা আছে যতক্ষণ পর্যন্ত তা বাকীদের উপরে বিরূপ প্রভাব না ফেলছে৷ তারা মনে করে জীব-জড় সম্বলিত এই প্রকৃতি ঈশ্বরেরই ভিন্ন ভিন্ন রূপের বহিপ্রকাশ মাত্র৷ তাই তারা সর্ব জীবে শিব দেখে৷ তাই তারা সঙ্ঘর্ষ নয়, সমন্বয়কেই শান্তির একমাত্র উপায় বলে মনে করে৷ এই চিন্তাধারা হল ভারতের মাটিতে উদ্ভূত সকল মতাদর্শের মূল ভিত্তি৷

এখন প্রশ্ন হলো, উভয়েই মানুষ হলেও উপরোক্ত দুই ধরণের মনুষই কি সমান? উভয় প্রকারের চিন্তা ভাবনাই কি সমান পর্যায়ের? উভয় প্রকারের চিন্তা ভাবনাই কি সমানভাবে সকলের জন্য মঙ্গলকারী? পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার নিরিখে, মানবের সার্বিক বিকাশের জন্য যোগ্য পরিবেশ তৈরীর নিরিখে দুই ধরণের চিন্তাই কি সমান ভাবে কার্যকারী? নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে বিচার করলে উত্তর হবে 'না'৷

তাহলে সব ধর্মমত সমান, সব ধর্মের সার এক ইত্যাদি কথা প্রচার করে থাকেন, তারা কী যুক্তিতে কথাগুলি বলছেন-তা সর্ব সমক্ষে জিজ্ঞাসা করা কি আমাদের উচিত নয়? তারা যখন বলেন গীতা-কোরাণ-বাইবেলে একই কথা লেখা আছে, তখন কি আমাদের একটু যাচাই করে নেওয়া উচিত নয় যে বক্তা ওই ধর্মগ্রন্থগুলি আদৌ পড়েছেন কি না?

ভারতবর্ষকে ধ্বংস করার জন্য এক বিরাট চক্রান্ত চলছে৷ হিন্দুদের বিভ্রান্ত করে হীনবল করে রাখা হচ্ছে৷ এখানে একই পুকুরে আমাদের মত রুই-কাতলার সাথে বোয়াল-তেলাপিয়ার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের অবাস্তব স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে৷ এর পরিণাম হল সম্পূর্ণ ভারতের ইসলামিকরণ৷ হিংসা আর প্রেম কখনও এক হয় না৷ সঙ্ঘর্ষ আর সমন্বয় কোনদিনও এক হতে পারে না৷ হিংসা ও সঙ্ঘর্ষ হল অধর্ম আর প্রেম ও সমন্বয় হল ধর্ম৷ তবে ধর্মের এই সংজ্ঞা প্রযোজ্য হবে সাধরণ পরিস্থিতিতে ৷ কিন্তু যখনই অধর্ম মাথা তুলবে, ধর্মের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে, তখন ধর্ম পালনের থেকে ধর্মের সংরক্ষণকেই প্রাথমিকতা দিতে হবে৷ আর যুদ্ধক্ষেত্রে 'শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ' হল থাম্ব রুল, সে কথা ভগবান শ্রীরাম এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমাদেরকে শিখিয়ে গেছেন৷ অধর্মের বিনাশ করে ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে হিংসা ও সঙ্ঘর্ষের পথ অবলম্বন করাই যে সব থেকে বড় ধর্ম তা বোঝানোর জন্য ভগবান স্বয়ং বারবার অস্ত্রধারণ করেছেন৷ কখনও নৃসিংহদেব, কখনও রামচন্দ্র হয়ে নিজের হাতে হিরণ্যকশিপু, রাবণ বধ করেছেন৷ কখনও শ্রীকৃষ্ণ হয়ে ভয়ংকর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে আত্মীয় স্বজনদের হত্যা করতে পান্ডবদের প্রেরণা দিয়েছেন৷ আজ এই দেশ-ধর্ম রক্ষা করতে হলে ভগবান প্রদর্শিত পথেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে৷ এই ধর্মপথ ব্যতীত অন্য কোন পথ নেই৷

Sunday, March 15, 2015

এই ভন্ডামির শেষ কোথায়?

যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারতঃ
অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানম্ সৃজাম্যহম্৷
পরিত্রাণায় সাধুনাং বিনাশায়চ দুষ্কৃতাং
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে৷৷

যখন যখন ধর্ম পালন গ্লানির বিষয় হয়ে দাঁড়াবে এবং অধর্মের অভ্যুত্থান ঘটবে তখন তখন সাধুদের পরিত্রাণ এবং দুষ্কৃতিদের বিনাশ করতে স্বয়ং ভগবান আবির্ভূত হবেন৷ কথাটিতে বিশ্বাস করলেও এর মর্মার্থ উপলব্ধি করার চেষ্টা খুব কম লোকই করেন৷ বেশীর ভাগ কৃষ্ণভক্তের বিশ্বাস ভগবান আসবেন, দুষ্কৃতিদের শাস্তি দেবেন আর স্বর্গে পাড়ি দেবেন৷ আর আমরা খোল-করতাল বাজিয়ে তারস্বরে সঙ্কীর্ত্তন করে ভগবানের ভজনা করবো৷ কাজ শেষ করে চলে যাওয়ার পর ভগবানের দুষ্টদমনের লীলাটা বেবাক্ ভুলে যাবো৷ তবে রাসলীলাটা ভুলে গেলে চলবে না৷ ভগবানের জীবনের ওই অংশটা বাদ দিয়ে আর কিছুই তো গ্রহণ করার যোগ্যতা বা প্রবৃত্তি, কোনটাই আমাদের নেই৷

সমাজে যখন মূল্যবোধের পরিবর্তন হয়, সততা, ন্যায়, পরার্থপরতা প্রভৃতি গুণগুলির অবমূল্যায়ন করা হয় তখনই উপরোক্ত গুণসম্পন্ন ধার্মিক ব্যক্তিদের মান-মর্যাদা থাকে না৷ ধর্মপালন গ্লানির বিষয় হয়ে দাঁড়ায়৷ পাশাপাশি ব্যক্তিস্বার্থ, অন্যায়, মিথ্যা - এইগুলি হয়ে দাঁড়ায় জীবনযাত্রা নির্বাহের মূল সাধন, তখনই অধর্মের অভ্যুত্থান ঘটে৷ আজ আমাদের সমাজে ধার্মিক ব্যক্তিরা বোকা এবং বাস্তববোধহীন বলে গণ্য হচ্ছেন৷ আর অসৎ পথে, অন্যকে শোষণ করে যারা সম্পন্ন হয়ে উঠেছেন তারাই আজ আইকন৷ আজ সম্মান ও মর্যাদার এই মাপকাঠিটা কিন্তু আমরাই স্থাপন করেছি৷ তাই আমাদেরকে অধর্মের পৃষ্ঠপোষক বললে কি কোন ভুল হবে? তাই আজকে যদি সেই মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভগবান স্বয়ং আবির্ভূত হন, তাহলে তাঁর রোষানলের শিকার আমরা ছাড়া আর কে হবে?

 তাছাড়া ভগবান তো সর্বশক্তিমান৷ এই সমগ্র সৃষ্টির নিয়ন্ত্রক তিনি৷ তাহলে তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার জন্য তাঁকে মানুষরূপে মর্ত্যলোকে অবতীর্ণ হতে হবে কেন? পন্ডিতরা বলবেন লোকশিক্ষার জন্য৷ শিক্ষাটা কি? মানুষের সমস্যার সমাধান মানুষকেই করতে হবে বলে তাঁর বিধান৷ তিনি স্বয়ং এই বিধানের অমর্যাদা করতে চান না বলেই তিনি মানুষরূপে জন্ম নিয়ে কর্তব্য পালন করেন৷ অর্থাৎ ধর্মের রক্ষা আর অধর্মের বিনাশের দায়িত্ব মানুষেরই অর্থাৎ আমাদেরই৷ তাই আমরা শ্রী রামচন্দ্রকে দেখেছি বনবাসী-গিরিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে রাবণবধ করতে৷ মহাভারতের যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণকে দেখেছি অস্ত্রধারণ না করার শপথ নিতে৷ আর আমরা একদিকে অধর্মের পথে চলছি, অধর্মকে সংরক্ষণ করছি, অধর্মকে নীরবে সহ্য করছি৷ অপরদিকে আমাদের থেকে শক্তিশালী দুষ্কৃতিদের হাত থেকে পরিত্রাণের আশায় ভগবানের শরণাপন্ন হচ্ছি৷ এই ভন্ডামির শেষ কোথায় তা সম্ভবতঃ স্বয়ং ভগবানও বলতে পারবেন না৷

Sunday, March 8, 2015

আইসিস, তালিবানদের বর্বরতাই কি তৎকালীন ভারতে মুসলিমদের অত্যাচারের প্রকৃষ্ট প্রমাণ নয়?


আফগানিস্তানে পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা সুবিশাল সেই বুদ্ধমূর্তি, যাকে ওয়ার্লড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছিল ইউনেস্কো, শান্তির ধর্ম ইসলামের নামে সভ্যতার ইতিহাসের অন্যতম সেই প্রতীক ধ্বংস করেছিল তালিবানরা। এবার ইরাকে একই ভুমিকায় আইসিস৷ সুপ্রাচীন অ্যাসিরিয় সভ্যতার রাজধানী নিমরুদের অমূল্য সব স্থাপত্য, মূর্তি, লিপি, ভেঙে-গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিল এই জঙ্গিরা। ধ্বংস করে ফেলা হল খ্রীষ্টের জন্মের তেরোশ বছর আগেকার অ্যাসিরিয় সভ্যতার নিদর্শন। মুছে গেল মানুষের সভ্যতার আরও এক সুপ্রাচীন অধ্যায়। অ্যাসিরিয়ার রাজধানী নিমরুদের ধ্বংসস্তূপ থেকে বহু যুগের চেষ্টায় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা উদ্ধার করেছিলেন সেই সময়কার বহু মূর্তি , ভাস্কর্য ও কিউনিফর্ম লিপি। সেগুলি থেকে ধাপে ধাপে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল মানুষের সুপ্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস। মসুলের কাছে এক মিউজিয়মে রাখা ছিল সেই সব অমূল্য উদাহরণ। ইতিহাসের সেই সব নিদর্শন একে একে গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হল ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষে। বড় বড় হাতুড়ি, ইলেকট্রিক ড্রিল নিয়ে এসে ভেঙে ফেলা হল রাজা আসুরবানিপালের মূর্তি। কত সব মূর্তি, ভাস্কর্য, মুখের আদল গুঁড়িয়ে ফেলা হল কয়েক ঘণ্টায়, যেগুলি তৈরি করার মত দক্ষতায় পৌছতে মানুষকে চেষ্টা করতে হয়েছে কয়েক শতাব্দী ধরে। নিমরুদ থেকে পাওয়া গিয়েছিল দু ডানাওয়ালা সিংহের মূর্তি। ইতিহাসের ধূলো ঘেঁটে জানা গিয়েছিল সেই মূর্তি গড়া হয়েছিল খ্রীষ্টপূর্ব নবম শতকে। গুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছে সেই মূর্তিও।

বিশ্বের তাবড় বুদ্ধিজীবিমহল চিৎকার করে গলা ফাটাচ্ছে যে এই সন্ত্রাসের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই৷ ওদিকে ইসলামের মূল গ্রন্থ কোরাণের আয়াতগুলি, তাদের সমাজের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত আঞ্জেম চৌধুরী ও জাকির নাইকের মত ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্য এবং মুসলমানদের অতীত ও বর্তমান বিধ্বংসী কার্যকলাপ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে ইসলামের নির্মম, নিষ্ঠুর সত্যটাকে৷ উদাত্ত কন্ঠে ঘোষণা করছে যে তালিবান, আইসিস, বোকোহারাম যা করছে সেটাই বিশুদ্ধ ইসলাম৷ এই সত্যদর্শন করার জন্য দার্শনিকের প্রজ্ঞা দরকার হয় না৷ দরকার খোলা চোখ আর নিজের চোখের উপর পূর্ণ বিশ্বাস৷ পেট্রোডলারজীবি, রাজনৈতিক নেতাদের উচ্ছিষ্টভোগী বুদ্ধিজীবিদের চোখ দিয়ে দেখলে সত্যকে দেখা যাবে না৷ কোরাণ পড়ুন৷ দেখবেন কোরাণে বর্ণিত পথনির্দেশ কিভাবে বাস্তবে রূপায়িত করছে আইসিস৷ ইসলাম কি? কোরাণ- হাদিশের তত্ত্ব ইসলাম না কি বুদ্ধিজীবিদের বকোয়াস্ ইসলাম ? তালিবান, আইসিসরা যা করে চলেছে তাকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করে ইসলামের তত্ত্ব৷ মাঝখান থেকে যারা বলে চলেছে ইসলামের সাথে এই সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই, তারা বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করছে যাতে তালিবান বা আইসিসের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ তৈরী হলেও ইসলাম সামগ্রিকভাবে সঙ্কটগ্রস্ত না হয়৷ এদের ইসলামের বেতনভোগী এজেন্ট ছাড়া আর কী বলা যায়?

ইসলামের রণকৌশল হল যেখানে এবং যতদিন তারা দুর্বল থাকবে , সেখানে ততদিন তারা মিলেমিশে থাকবে বাকীদের সাথে৷ আর যেখানে পর্যাপ্ত শক্তি অর্জন করবে, সেখানেই শুরু করবে ইসলামীকরণের অভিযান- ডাইরেক্ট অ্যাকশন৷ সব ফ্রন্টে একসাথে লড়াই হবে না৷ যারা লড়াই করছে না, তারা গোপনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে যারা লড়াই করছে তাদের প্রতি৷ পাশাপাশি প্রয়োজন হলে প্রকাশ্যে মৃদু ভাষায় তিরস্কার করবে সন্ত্রাসবাদীদের৷ এই উল্টোপুরাণ শুনে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছুই নেই৷ কারণ এটাও ইসলাম অনুমোদিত রণকৌশল৷ ইসলামের পরিভাষায় একে 'তাকিয়া' বলা হয়৷ আর এই সম্পূর্ণ প্রসেস্ হল জেহাদ৷ জেহাদ প্রতিটি মুসলমানের জন্য পবিত্র কর্তব্য, জন্নতে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা ৷ সারমর্ম হল, যারা কোরাণে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসী তারাই মুসলমান, যারা মুসলমান তারাই জেহাদী, যারা জেহাদী তারাই তালিবান, আইসিসদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহচর৷ জেহাদের এই মডেল আমাদের কাছে নতুন নয়৷ যেখানে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ সেখানেই হিন্দুর উপরে অত্যাচার, আর যেখানে মুসলমানরা দুর্বল, সেখানে দাঁত কেলিয়ে মিলেমিশে থাকা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিছিলে সামনের সারিতে অবস্থান৷ কাশ্মীর থেকে শুরু করে বাংলার মুর্শিদাবাদ, মালদা, দিনাজপুর, নদীয়া, দুই ২৪ পরগণা, বীরভূম-সর্বত্র একই চিত্র৷ গত লোকসভা নির্বাচনে মোদীর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত মুসলমানরাই আজকে রাতারাতি মোদীভক্ত হয়ে দলে দলে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে৷ তাকিয়া তাকিয়া তাকিয়া ! রাম পুণ্যানির মত বামপন্থী বুদ্ধিজীবিরা আমাদের আজও বুঝানোর চেষ্টা করেন যে আমাদের দেশের মুসলমান শাসকেরা মন্দির ধ্বংস করেছিলেন, তরবারির সামনে ধর্মান্তরিত করেছিলেন, গণহারে কাফের হত্যা করেছিলেন - এসব কথা সত্য নয়৷ এসব হিন্দু মৌলবাদীদের বানানো গল্প৷ তাদের কথা যে কতটা মিথ্যা তা প্রমাণ করার জন্য অতীতে যাওয়ার কি কোন দরকার আছে? বর্তমানের আইসিস, তালিবানদের বর্বরতাই কি তৎকালীন ভারতে মুসলিমদের অত্যাচারের প্রকৃষ্ট প্রমাণ নয়?

তাই আজ নিজের চোখ দিয়ে দেখুন, দেখবেন আগতপ্রায় ধ্বংসলীলার ভয়ংকর চিত্র৷ নিজের কান দিয়ে শুনুন, শুনতে পাবেন মহাতান্ডবের পদধ্বনী৷

Friday, March 6, 2015

ধর্ষণে অভিযুক্ত শরিফুদ্দিনকে জেল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মৃত্যুদন্ড দিল জনতার আদালত

ধর্ষণে অভিযুক্ত শরিফুদ্দিনকে জেল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে মৃত্যুদন্ড দিল জনতার আদালত৷ গত ৫ ই মার্চ নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর শহরের ঘটনা৷ অভিযোগ, গত ২৪ ফেব্রুয়ারী ডিমাপুরের এস ডি জৈন কলেজের এক ছাত্রীকে মাদকদ্রব্য খাইয়ে দফায় দফায় ধর্ষণ করে এই শরিফুদ্দিন৷ ধর্ষিতার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে শরিফুদ্দিনকে৷ ওই দিনই ডাক্তারী পরীক্ষা হয় মেয়েটির৷ ৫ দিন পুলিশ হেপাজতের পর জেল হাজতে পাঠানো হয় অভিযুক্তকে৷
এই পর্যন্ত ঘটনার মধ্যে কোন বৈচিত্র নেই৷ আমাদের রাজ্যে এরকম ঘটনা আকছাড় হচ্ছে এবং সেগুলোর খবর অভিযুক্ত জেলে যাওয়ার পরেই ধামাচাপা পড়ে যায়৷ শেষ পর্যন্ত দোষীদের কি পরিণতি হল কেউ তার খোঁজ রাখে না৷ কামদুনীর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের কারেন্ট স্টেটাস কি, তার খবর ক'জন জানে? বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই জামিন পেয়ে যায় অপরাধীরা৷ সে খবর কোথাও ছাপা হয় না৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে শাস্তি হলেও তা হয় কয়েক বছর জেল খাটার শাস্তি, বড়জোর যাবজ্জীবন৷ তাতে ধর্ষিতার প্রতি সুবিচার করা হল বলে অনেকে মনে করতে পারেন৷ কিন্তু এতে ধর্ষকের অপরাধবোধ বা অনুশোচনা বিন্দুমাত্র হয় বলে আমি মনে করি না৷ আমি যে সঠিক, তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ নির্ভয়া কান্ডে ধৃতদের একজনের সাক্ষাৎকার, যা নিয়ে এখন গোটা দেশ তোলপাড়৷ তাছাড়া আমার মতে এই শাস্তি হল গুরু পাপে লঘুদন্ড৷ এই শাস্তির ভয় ধর্ষণকারীদের নিবৃত্ত করবে বলে যারা মনে করেন, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন৷ কারণ দুর্নীতির জমানায় জেলখানা যে আর কষ্টের জায়গা নয়, যাদের সামান্য অভিজ্ঞতা আছে তারা জানেন৷ আর টাকা এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার জোরে জামিন নিয়ে বুক ফুলিয়ে বাইরে ঘুরে বেড়ানো আজ বিশেষ কঠিন কাজ নয়৷ তাই সহজ কথায় বলতে পারি যে যতক্ষণ পর্যন্ত দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত  বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় অপরাধীকে উপযুক্ত শাস্তিও দেওয়া সম্ভব নয় এবং সমাজকে অপরাধমুক্ত করাও সম্ভব নয়৷
এই নিরাশা যে শুধু আমার নয়, এযে গোটা দেশের তা প্রমাণ করল নাগাল্যান্ড৷ দেশের আইন, বিচার ব্যবস্থার প্রতি চরম অনাস্থা থেকে উদ্ভুত ক্ষোভ সেদিন অমানুষ, নৃশংস পশুতে পরিণত করে তুলল লাজুক, নম্র কিন্তু স্বাভিমানী নাগা মানুষগুলোকে৷ জেল থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তারা নৃশংসভাবে হত্যা করল ধর্ষককে৷ শরিফুদ্দিনকে প্রকাশ্য রাস্তায় ফাঁসী দিয়ে ফেটে পড়ল পৈশাচিক উল্লাসে৷ এই ঘটনায় বিশ্বমানবতা কতটা সংকটগ্রস্ত হল তা হয়তো মানবতাবাদের ধ্বজাধারীরা বলতে পারবেন৷ তবে আমি এইটুকু হলফ করে বলতে পারি যে আগামী কয়েকটা বছর নাগা মহিলারা এতটা সুরক্ষিত অনুভব করবেন যা দেশের কোন ফৌজ তাঁদের কোনদিন দিতে পারে নি বা পারবে না৷ আর এই শরিফুদ্দিনরা নাগা মেয়েদের দিকে কয়েক বছর চোখ তুলে তাকাতেও ভয় পাবে৷
ঘটনাটা সম্পর্কে বোদ্ধারা অনেক মতামত অবশ্যই দেবেন, দেওয়া শুরুও করেছেন৷ তবে যেটা ঘটেছে সেটা ঠিক না ভুল সে সম্পর্কে যারা ঠান্ডা ঘরে বসে তাদের বেদ-পুরাণ উল্টে পাল্টে বিচার করে মতামত দিচ্ছেন, তাদের মতামতের তুলনায় আমার কাছে নির্ভয়া এবং কামদুনীর শিপ্রার আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের মতামত অনেক বেশী দামী৷ নির্ভয়া, শিপ্রাদের মানবিক অধিকারকে যারা পশুর মত ছিঁড়ে খায়, তাদের সাথে কিসের মানবিক ব্যবহার? সর্বোপরি নাগারা তাদের সমাজের একটি মেয়ের সম্ভ্রমহানীতে যেভাবে পাগল হয়ে উঠেছে তা অনুসরণ যোগ্য৷ এই সংবেদনশীলতা আমাদের সমাজে সঞ্চারিত হোক-ভগবানের কাছে এই প্রার্থনা করি





Thursday, March 5, 2015

মহারাষ্ট্র সরকারের এই সাহসী পদক্ষেপ কি ভারতের রাজনীতিতে নতুন যুগের বার্তা নিয়ে এলো?

মহারাষ্ট্র অ্যানিমল প্রিভেনশন অ্যাক্ট (এমএপিএ) অনুযায়ী এই রাজ্যে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ হল গোরু, ষাঁড়, বলদ, বাছুর হত্যা। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় সোমবারই এই নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে তাঁর সম্মতি জানিয়েছেন। এই আইনের অমান্য করলে শাস্তি অজামিন যোগ্য ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। মহারাষ্ট্রে পশুহত্যা বিরোধী আইনে আগে এই সাজার মেয়াদ ছিল ছয় মাস। জরিমানার টাকার অঙ্কও ১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার করা হয়েছে।
১৯৯৫ সালে বিজেপি ও শিবসেনার জোট সরকার এমএপিএ-এর অধীনে ষাঁড়, বাছুর হত্যা বন্ধ করতে চেয়ে একটি অ্যামেন্ডমেন্ট আনতে উদ্যোগী হয়। বিধানসভায় এই বিল পাশ হওয়ার পরে ১৯৯৬ সালে কেন্দ্রের কাছে সম্মতি জানানোর জন্য এই বিল পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে সোমবার মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের কাছে একটি চিঠি আসে। এই চিঠিতে জানানো হয়েছে ভারতীয় সংবিধানের ২০১ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

পাশাপাশি সরকারী চাকুরী এবং শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমানদের জন্য ৫% সংরক্ষণের যে অধ্যাদেশ এনেছিল পূর্ববর্তী কংগ্রেস-এন সি পি সরকার, তাকেও সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছে বর্তমান দেবেন্দ্র ফড়নবিস সরকার৷

বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত বর্তমান রাজনৈতিক ধারার সম্পূর্ণ বিপরীতে গৃহীত একটি ব্যতিক্রমী এবং সাহসী সিদ্ধান্ত৷ এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন মহারাষ্ট্রসহ সারা ভারত তথা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা হিন্দুদের মনে এক আশার সঞ্চার করবে , পাশাপাশি হিন্দুদের উপরে এক বিশাল দায়িত্বও অর্পণ করবে ৷ এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নিশ্চিতভাবে মহারাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না৷ এর ঢেউ আছড়ে পড়বে ভারতের সর্বত্র৷ হিন্দু সেন্টিমেন্টকে সম্মান জানিয়ে এত বড় পদক্ষেপ অবশ্যই দেশের হিন্দুদের মনোবলকে যথেষ্ট পরিমাণে চাঙ্গা করবে৷ দেশব্যাপী হিন্দুদের অনুভব হবে যে নরেন্দ্র মোদীকে হাত খুলে ভোট দিয়ে আমরা ভুল করি নি৷ পাশাপাশি বিজেপি-র কাছে হিন্দুদের আশা-আকাঙ্ক্ষার মাত্রাটাও অনেকটা বেড়ে যাবে৷ এক্ষেত্রে হিন্দুদের কাছে বিজেপিও কি কিছু আশা করবে না? তাই হিন্দুকে আজ দেওয়া নেওয়ার এই খেলায় সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখাতে হবে৷ এই পদক্ষেপের উপযুক্ত প্রতিদান বিজেপি-র অবশ্যই প্রাপ্য৷ সেই প্রতিদান দেওয়ার দায়িত্ব হিন্দু সমাজকে নিতে হবে৷ গত লোকসভা ভোটের মত আগামী বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনগুলিতে প্রমাণ করতে হবে যে এদেশে ভোটে জিততে হলে আর মুসলিম তোষণ করতে হয় না৷ যে দল হিন্দু হিতের কাজ করবে, এদেশে একমাত্র তারাই রাজ করবে৷ এদেশের রাজনীতিতে মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি এবং তাদের দোসর সেক্যুলারবাদীদের পায়ের তলায় আজ আর মাটি নেই৷ কিন্তু এজন্য বিজেপিকেও হিন্দুর বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে হবে৷ তাই আরও কয়েকটি ইস্যুতে বিজেপিকে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, অনুপ্রবেশ আটকানো, ইউনিফর্ম সিভিল কোড ইত্যাদি৷ আজকে বিজেপি যদি দেশরক্ষা, হিন্দুরক্ষার জন্য অত্যন্ত আবশ্যক এই সমস্ত ইস্যুতে সস্তা রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারে, হিন্দুরাও বিজেপিকে বিমুখ করবে না৷ তবে একথা বলতে কোন দ্বিধা নেই যে মহারাষ্ট্র সরকারের এই পদক্ষেপ বিজেপি-র আদর্শের প্রেরণাতেই হোক বা রাজনৈতিক রণকৌশলগত কারণেই হোক, হিন্দুর জন্য উত্তম৷ কমপক্ষে এখান থেকে হিন্দু তোষণের রাজনীতির শুভারম্ভ তো হলো!

Wednesday, March 4, 2015

হিন্দু – মুসলিম ঐক্য সম্পর্কে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ

ভারতবর্ষের এমনই কপাল যে, এখানে হিন্দু – মুসলমানের মত দুই জাত একত্র   হয়েছে – ধর্মমতে হিন্দুর বাধা প্রবল নয়, আচারে প্রবল; আচারে মুসলমানের বাধা প্রবল নয়, ধর্মমতে প্রবল ৷ এক পক্ষের যে দিকে দ্বার খোলা, অন্য পক্ষের সে দিকে দ্বার রুদ্ধ ৷ এরা কি করে মিলবে? নান্যঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায় ৷

                                                                    …………….কালান্তর; পৃষ্ঠা – ৩১৩

দেশবিভাগে মুসলিম লীগের অন্যতম শরিক অনুসূচিত জাতির তত্কালীন অবিসংবাদিত নেতা যোগেন্দ্রনাথ মন্ডলের উপলব্ধি

“ইসলামের নামে কি আসছে পাকিস্তানে ? ….পাকিস্তান হিন্দুদের জন্য একটা অভিশপ্ত স্থান এবং হিন্দুদের থাকার সম্পূর্ণ অযোগ্য। …. তারা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এছাড়া অন্য কোনো অপরাধ তাদের নেই। মুসলিম লীগ নেতারা বারংবার বিবৃতি দিয়ে জানাচ্ছে যে, পাকিস্তান মুসলিম রাষ্ট্ররূপে জন্মগ্রহণ করেছে এবং মুসলিম রাষ্ট্ররূপেই সে বেড়ে উঠবে।…..মহান শরীয়ত নির্দেশিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় শাসন ক্ষমতা শুধুমাত্র মুসলমানদের হাতেই থাকবে। হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুরা সেখানে হবে জিম্মি। এই সব জিম্মিরা রাষ্ট্রের কাছ থেকে তাদের নিরাপত্তা এবং বাঁচার অধিকার পেতে কিছু মূল্য দিতে বাধ্য থাকবে। মিঃ প্রাইম মিনিস্টার, অন্য যে কোনো মানুষের থেকে আপনিই ভালো জানেন কি সেই মূল্য। গভীর উত্কন্ঠা এবং দীর্ঘ দিন ধরে চিন্তা ভাবনা করে আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হিয়েছি যে, পাকিস্তান হিন্দুদের বসবাসের জায়গা নয়। সেখানে তাদের ভবিষ্যত তমসাচ্ছন্ন; তাদের জন্য অপেক্ষা করছে ধর্মান্তরিতকরণ অথবা নিশ্চিত অবলুপ্তির করল গ্রাস। ”
…………. যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল

দেশরক্ষায় চাই সবার অংশগ্রহণ

আগেই বলেছি যে ভারতবর্ষ বিশুদ্ধ হিন্দুরাষ্ট্র এবং একমাত্র হিন্দুরাই এদেশের রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় সমাজ। পাশাপাশি ভারতে বসবাসকারী অহিন্দুরা আইন অনুসারে এদেশের নাগরিক হলেও কখনোই রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় বলে বিবেচিত হতে পারে না। তাহলে বাস্তব এটাই যে ভারতের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগ হিন্দু শতকরা ২০ ভাগ এমন একটি জনগোষ্ঠীর সাথে সহাবস্থান করছে যারা এদেশের রাষ্ট্রীয় নয়। বরং এই জনগোষ্ঠীর এক বিরাট অংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবেDEbরাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত আছে এই কথা বললে অত্যুক্তি করা হবে না। ছলে বলে কৌশলে ভারতে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করার এক গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ভারতে বসবাসকারী মুসলমানদের সবাই এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত – একথা বলা যায় না কিন্তু একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, রাষ্ট্রবিরোধী কাজে লিপ্ত মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুসলিম সমাজ থেকে কোনো আওয়াজ উঠছে না। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য মারমুখী হয়ে রাস্তায় নামতে অভ্যস্ত মুসলিম সমাজ এ বিষয়ে একদম নিশ্চুপ কেন – তা বুঝতে বেশি বুদ্ধির প্রয়োজন হয়না।
আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতেই এই দেশ ভাগ হয়ে ছিল। সেই সময় যারা পাকিস্তানের দাবিতে “ডাইরেক্ট অ্যাকশন” – এর নামে ভারতের মাটিকে রক্তে রাঙিয়ে দিয়েছিল, তাদের সিংহভাগ স্বপ্নের পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পরেও এই ‘না-পাক’ ভারতেই থেকে গিয়েছিল। তাহলে ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট পর্যন্ত যারা ভারতের মাটিকে ‘না পাক’ মনে করত, ঠিক পরের দিন অর্থাৎ ১৫ ই আগস্ট থেকে কোন্ জাদুমন্ত্রে তারা এদেশের দেশভক্ত নাগরিক হয়ে গেল তা একমাত্র আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতারা এবং সেকুলারিজমের ধ্বজাধারীরাই বলতে পারবেন। অতএব বাস্তব এটাই যে দেশ ভাগ হলেও দেশভাগের বীজ কিন্তু এদেশের মাটিতেই থেকে গেল। সেই বীজ আজ মহীরূহে পরিণত হয়েছে।সেই বীজ হল ইসলামের সর্বোচ্চ আদর্শগুলির অন্যতম – ‘দারুল ইসলাম’।
ইসলামে এই মহান (?) আদর্শে বিশ্বাসীরা আজও এই দেশকে দারুল ইসলামে পরিণত করতে সদাসচেষ্ট। আর এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে তাদের প্রধান সহায়করা হলেন এদেশের ভোটভিক্ষু রাজনীতিবিদরা এবং সেকুলার বুদ্ধিজীবিরা।ভারতবর্ষকে দারুল ইসলামে পরিণত করতে যে কর্মসূচীর বাস্তবায়ন এখানে প্রতিনিয়ত চলছে, সেগুলিকে ভালোভাবে না জানলে এবং না বুঝলে এই ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করা যাবে না। তাই এই গভীর ষড়যন্ত্রের প্রধান কয়েকটি সূত্র আমি এই লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করব।
অস্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি : ভারতের সংবিধানের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আইনসম্মত উপায়ে ভারতকে দখল করার এ এক অমোঘ অস্ত্র। আমরা জানি যে কাশ্মীর আজ ভারতে থেকেও ভারতে নেই। কারন মুসলিম জনসংখ্যা ক্রমাগত বাড়াতে বাড়াতে অবশেষে সংখ্যালঘু হিন্দুদের বিতাড়িত করার মাধ্যমে কাশ্মীরকে হিন্দুবিহীন করে ফেলা হয়েছে।আজ ভারতরাষ্ট্রের শাসন সেখানে নখদন্তহীন শার্দুলের হম্বিতম্বিতে পরিণত হয়েছে। ‘কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ’ – মাঝে মাঝে এই হুঙ্কার ছাড়া ভিন্ন কাশ্মীরের অন্য কোন বিষয়ে নাক গলানোর ক্ষমতা ভারতের শাসনকর্তাদের নেই। এই ‘কাশ্মীর মডেল’ সম্পূর্ণ ভারতব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হলে জনসংখ্যা বাড়াতে হবে, ভারতের জনচরিত্র (Demography) বদলে দিতে হবে। এই কাজে আইনগত কোন বাধা নেই। তাই এই কাজ চলছে বিনা বাধায়।
অনুপ্রবেশ : অরক্ষিত সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে দলে দলে অবৈধভাবে বাংলাদেশী নাগরিকরা ঢুকে পড়ছে এদেশে। সঙ্গে ঢুকছে বাংলাদেশ থেকে তাড়া খাওয়া ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদীরা। ভোটভিক্ষু, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক নেতাদের বদান্যতায় এদেশের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র হাসিল করে সহজেই তারা ছড়িয়ে পড়ছে দেশব্যাপী। দিল্লী, মুম্বাই, চেন্নাই থেকে শুরু করে জয়পুর, বাঙ্গালোর পর্যন্ত ভারতের সমস্ত এলিট সিটি তে ছড়িয়ে আছে এদের অসংখ্য বস্তী। কোলকাতা এবং এর শহরতলীতেও গড়ে উঠছে প্রচুর অবৈধ বস্তী। এদের গায়ে হাত দেওয়ার ক্ষমতা কারো নেই। এদের তাড়ানোর কথা বললে রাজ্যের প্রশাসনিক ক্ষমতার শীর্ষস্থানীয়রাই যেখানে কোমরে দড়ি বেঁধে জেল খাটানোর হুমকি দেন, সেখানে কার ঘাড়ে ক’টা মাথা যে এদের গায়ে হাত দেয়?
ল্যান্ড জেহাদ : ছলে-বলে-কৌশলে হিন্দুর জমি দখল করা হচ্ছে সর্বত্র। সম্পূর্ণ হিন্দু এলাকায় বেশী টাকা দিয়ে হিন্দুর জমি কেনা হচ্ছে। তৈরী হচ্ছে মসজিদ। এলাকায় একজনও মুসলমান না থাকলেও নিয়ম করে বাইরে থেকে মুসলমানেরা আসছে সেখানে নামাজ পড়তে। এর পরেই এলাকার হিন্দুদের উপর অর্পিত হচ্ছে বিভিন্ন বিধিনিষেধ – নামাজের সময় মন্দিরের মাইক বন্ধ রাখতে হবে, মসজিদ সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে পূজার শোভাযাত্রা করা যাবে না, ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থাৎ হিন্দুর ধর্মাচরণের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি, হিন্দুনারী ধর্ষণ ও অপহরণ, তোলাবাজি, এমনকি খুন-জখম করে সন্ত্রস্ত হিন্দুদের বাধ্য করা হচ্ছে ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যেতে। রেল লাইন, ন্যাশনাল হাইওয়ের ধারে পড়ে থাকা সরকারী জমি দখল করে গড়ে উঠছে অবৈধ বস্তী। মোট কথা বিভিন্ন উপায়ে সুপরিকল্পিতভাবে হিন্দুর জমি হস্তগত করা হচ্ছে।
লাভ জেহাদ : বেছে বেছে হিন্দু মেয়েদের মিথ্যা প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাদের হিন্দু সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করার কাজ চলছে পরিকল্পনা মাফিক। অনেক ক্ষেত্রে বিয়ে হওয়ার আগে হিন্দু মেয়েরা জানতেও পারছে না যে তার জীবনসাথী হিসাবে সে যাকে বেছে নিচ্ছে, সেই ব্যক্তিটি হিন্দু নয়। সুপরিকল্পিত ভাবে সমাজের প্রতিষ্ঠিত, সম্পন্ন হিন্দু পরিবারের মেয়েদের টার্গেট করা হচ্ছে। বিয়ের পর সেই ধর্মান্তরিত মেয়ের সন্তান জন্মানোর সাথে সাথে তার হিন্দু পিতার সম্পত্তি দাবী করা হচ্ছে দেশের আইনকে হাতিয়ার করে। এই লাভ জেহাদের ফলে একদিকে যেমন হিন্দুর সংখ্যা কমছে, অপরদিকে সেই হিন্দু মেয়ের গর্ভ থেকে একাধিক অহিন্দু জন্ম নিচ্ছে। সর্বোপরি আইনের বলে হিন্দু সম্পত্তি চলে যাচ্ছে অহিন্দুর দখলে।
এই ষড়যন্ত্রের জাল ছিড়তে হবে। ভারতের রাষ্ট্রীয় সমাজ, হিন্দু সমাজকেই এই গুরু দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হবে। এই কাজ শুধুমাত্র সমর্থন করে হাত পা গুটিয়ে ঘরে বসে থাকলে হবে না। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুসারে এই কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে। দেশরক্ষার এই মহান কর্মযজ্ঞে আজও যারা যোগদান করবেন না, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। এই লড়াই নির্ণায়ক লড়াই। এই লড়াই জিততে হলে শত্রুর সাথে সাথে নিজ সমাজের বিশ্বাসঘাতকদেরও চিনতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শপথ নিতে হবে – দেশের এক ইঞ্চি জমিও আমরা আর ছাড়ব না। মা-বোনের সম্মান নষ্ট হতে দেব না।

ভারত জগাখিচুড়ি মার্কা রাষ্ট্র নয়, বিশুদ্ধ হিন্দুরাষ্ট্র

ভারতবর্ষ হিন্দুরাষ্ট্র। এদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরেও এবিষয়ে কারও মনে কোন সন্দেহ ছিল না। স্বামী বিবেকানন্দ বিশ্ববাসীর সামনে ভারতের পরিচয় তুলে ধরতে ‘ভারতীয়’ এবং ‘হিন্দু’ এই দু’টি শব্দকে সমার্থক শব্দ হিসাবেই বারবার তুলে ধরেছেন। ঋষি অরবিন্দ, বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র প্রমুখ মনীষীরাও ভারতীয় জাতীয়তা বলতে হিন্দু জাতীয়তার কথাই বলেছেন। এবিষয়ে তাদের বক্তব্যগুলি পড়লে স্পষ্ট বোঝা যায় যে এই ধারণাটাই DEb1তৎকালীন প্রচলিত ধারণা। হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের ভিত্তিতে গঠিত জগাখিচুড়ি মার্কা মিশ্র জাতীয়তার কোন ধারণা সে সময় গড়ে ওঠেনি।
পরবর্তীকালে স্বাধীনতার লড়াই থেকে দূরে সরে থাকা মুসলিম সমাজকে কাছে টানার জন্য একতরফা হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের গান গাইতে শুরু করলেন তৎকালীন দেশনেতারা। তাঁরা এই লক্ষ্যে এতদূর এগিয়ে গেলেন যে ‘ভারতবর্ষ’ এবং ‘ভারতীয়’ এই দুটি মূলগত অবধারণার বিষয়েই তাঁরা আপোষ করতে শুরু করলেন। স্বাধীনতার লড়াইয়ে তাঁদের আন্তরিকতার অভাব ছিল তা আমি বলবনা। কিন্তু ইংরেজদের তাড়িয়ে তাঁরা যে বস্তুটি হাতে পেতে চাইছিলেন, সেই মহামূল্যবান বস্তুটিকেই তাঁরা বিকৃত করে ফেললেন। ভারতবর্ষের প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা রাষ্ট্ররূপ অস্তিত্বকেই অস্বীকার করে বলা হল ‘India, a nation in making’- অর্থাৎ ইন্ডিয়া নামের একটি নতুন রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার পথে। আরও হাস্যকরভাবে গান্ধীজীকে জাতির জনক বলা হল। মুসলমানদের খুশি করে পাশে পাওয়ার আশায় আমাদের দেশবরেণ্য নেতারা আসমুদ্রহিমাচল বিস্তৃত আমাদের পূর্বপুরুষ, আমাদের প্রাচীন পরম্পরা, আমাদের ইতিহাস, আমাদের মহাপুরুষদের সঙ্গে আমাদের যে গভীর সম্পর্ক, তা ছিন্ন করে দিলেন। এক সভ্য, সুসংস্কৃত, বিশ্ববরেণ্য প্রাচীন রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে আমাদের স্বাভিমানবোধ নষ্ট করে দিলেন।
সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত লাগাতার এই প্রচারের পরিণাম হল এই যে আমরা মুসলমানদের কাছে টানতে তো পারলামই না, বরং মুসলমানরা আমাদের দেশের একটা অংশ ভেঙ্গে নিয়ে আলাদা পাকিস্তান গঠন করলো, যা শুরু থেকেই ভারতের শত্রুরাষ্ট্রে পরিনত হল। অথচ আজও আমরা হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের মালা জপ করে চলেছি। আজও আমরা সেই মিশ্র জাতীয়তার মোহমন্ত্রে আচ্ছন্ন। আজও হিন্দুরাষ্ট্রের কথা বললে হিন্দুরাই রে রে করে ওঠেন। আজও আমরা সত্য দর্শন করতে পারছি না। এই সত্য দর্শন করেছিলেন ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর, করেছিলেন ডঃ হেডগেওয়ার। তাঁরা বিশ্বাস করতেন ভারতে হিন্দু এবং মুসলমান দুটি ভিন্ন জাতি। এই দুটি জাতির ইতিহাসবোধ, জয়-পরাজয়ের অনুভূতি, শত্রু-মিত্র ভাবনা, নায়ক-খলনায়ক ভাবনা পরস্পর বিরোধী। এদের শ্রদ্ধার কেন্দ্র আলাদা, সংস্কৃতিক মূল্যবোধ আলাদা, সর্বোপরি ভারতের মাটির প্রতি এদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ ভিন্ন। অর্থাৎ হিন্দু এবং মুসলিম – দুটি আলাদা জাতি। ভারতবর্ষ হিন্দুর দেশ, হিন্দুরাই ভারতের জাতীয় সমাজ। বাকিরা প্রচলিত আইনের বলে এদেশে নাগরিক হিসাবে বসবাস করলেও তারা কোনদিন এদেশের জাতীয় সত্ত্বারূপে গণ্য হতে পারে না। ভারতে জন্মগ্রহণ করলেও যদি আপনি আপনার পূর্বপুরুষদের অস্বীকার করেন, ভারতের শত্রুকে মিত্ররূপে গ্রহণ করেন, ভারতের পরাজয়ে আনন্দিত হন, বিদেশী আক্রমণকারী ঘোরী-বাবর আপনার চোখে নায়ক হয়ে যায়; পক্ষান্তরে দেশের ধর্ম ও সংস্কৃতিরক্ষায় ব্রতী শিবাজী মহারাজ এবং মহারাণা প্রতাপ হয়ে যায় খলনায়ক, তাহলেও কি আপনাকে ভারতের জাতীয় সমাজের অংশ হিসাবে গন্য করা উচিত? না কি আপনাকে দেশদ্রোহী বলে চিহ্নিত করা উচিত?
প্রাচীন কাল থেকেই ভারতে বহু রাজ্য ও বহু রাজা থাকলেও ভারত রাষ্ট্র হিসাবে এক ছিল। আসমুদ্র হিমাচলের রাষ্ট্রীয়তা এক ছিল। এই রাষ্ট্রীয়তার ভিত্তি ছিল সনাতন ধর্ম। এই রাষ্ট্রীয়তার বন্ধন ছিল সাংস্কৃতিক বন্ধন। আমাদের দুর্ভাগ্য যে এই সত্যকে স্বীকার করার মত একজন সাহসী ও নিঃস্বার্থ রাষ্ট্রপুরুষকে এখনও দেশনেতা হিসেবে আমরা খুঁজে পাই নি, যিনি বুক চিতিয়ে ঘোষণা করবেন – এই দেশ হিন্দুর দেশ, ভারতবর্ষ হিন্দুরাষ্ট্র। তাই রাষ্ট্র সম্বন্ধে দেশবাসীর বিভ্রান্তি দূর করতে হবে। যে জাতি কে শত্রু আর কে মিত্র তা চিনতে পারে না, সেই জাতির ধ্বংস অনিবার্য। তাই জাতিকে শত্রু মিত্র চেনাতে হবে। আর এই হিন্দু রাষ্ট্রীয়তার পরিচয় দেশবাসীকে করাতে হবে।

চাই প্রতিক্রিয়াশীল হিন্দুত্ব

হিন্দু সমাজের সংবেদনশীলতা আজ তলানিতে ঠেকেছে। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ – দুই ভাবেই যথেচ্ছ আক্রমণ চলছে হিন্দুর উপর, অথচ হিন্দু নির্বিকার, কোন প্রতিক্রিয়া চোখে পড়ছে না, বিশেষতঃ আমাদের এই বাংলায়। একদিকে চলছে বাম বুদ্ধিজীবিদের তাত্ত্বিক আক্রমণ। অপরদিকে চলছে হিন্দুর উপর প্রত্যক্ষ আক্রমণ। আমরা চোখে দেখেও দেখছি না। কানে শুনেও শুনছি না। ধর্মনিরপেক্ষতার পর্দা আমাদের চোখ ও কান – দুটোকেই বন্ধ করে দিয়েছে। তথাকথিত বুদ্ধিজীবিদের কলম এবং মুখের দাপটে আমাদের সর্বজনীন, উদার হিন্দু মূল্যবোধ গুলি আজ আমাদের প্রগতিশীল বাঙালির কাছে সংকীর্ণতা এবং ধর্মান্ধতা হিসাবে পরিগণিত হচ্ছে। হিন্দু পরিচয় আজ আমাদের কাছে গৌরবের বিষয় নয়। এই স্রোতে গা ভাসানোর প্রবণতা ভাইরাসের মত ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। সাধু – সন্ন্যাসীরাও ব্যতিক্রম নন। সারা বিশ্বে হিন্দুত্বের পতাকা উড্ডীন করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। চিকাগো ভাষণের ছত্রে ছত্রে হিন্দুত্বের বিশ্বজনীনতার কথা তুলে ধরেছিলেন তিনি এবং স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন যে, এই হিন্দুধর্মের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি গর্ব অনুভব করেন। অথচ তাঁর ধ্বজাধারী রামকৃষ্ণ মিশনের কর্ণধাররা আজ নিজেদের হিন্দু পরিচয় অস্বীকার করতে তৎপর, এমনকি খোদ স্বামীজিকেই তারা এই তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতার মোড়কে মুড়ে আমাদের সামনে তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর।
হিন্দু মানেই সে প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ – এই সহজ সরল সত্যটা কেউ অস্বীকার করতে পারে কি? অন্য ধর্মীদের হাতে এত অন্যায়, এত অত্যাচার সহ্য করার পরেও ভারতবর্ষ যে আজও ধর্মনিরপেক্ষ, সংখ্যালঘুরা সারা পৃথিবীর তুলনায় এদেশে বেশি সুরক্ষিত – তার কারণ এদেশের সংবিধান বা সরকার তাদের সুরক্ষা দিচ্ছে বলে নয়। তার একমাত্র কারণ এই যে  ভারতবর্ষ এখনও হিন্দুপ্রধান। এদেশে প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষতার গ্যারান্টি কোনও রাজনৈতিক দল, সরকার বা প্রশাসন নয় – দিতে পারে একমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু সমাজ। তা না হলে আজ হিন্দুবিহীন কাশ্মীর ধর্মনিরপেক্ষ নয় কেন? কেন ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ নয়? শুধু কাশ্মীর কেন, যেখানে যেখানে হিন্দু সংখ্যালঘু হয়ে গেছে, সেই সেই অংশে ধর্মনিরপেক্ষতা হয়েছে পদদলিত। তার সাথে সাথে সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জেহাদী সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ। এই কঠোর সত্য স্বীকার করার সময় কি এখনও আসেনি? অথচ এই হিন্দুকেই ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ পড়ানো হচ্ছে। এই মেকি ধর্মনিরপেক্ষতার মাদকে আচ্ছন্ন করে হিন্দু সমাজকে হীনবল করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে হিন্দুকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দায়িত্বের বোঝা একা তার কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে । হিন্দুর স্বার্থ রক্ষার জন্য আওয়াজ উঠলেই সাম্প্রদায়িকতার তকমা এঁটে তাকে দমন করা হচ্ছে কঠোর ভাবে।
পাশাপাশি হিন্দুর উপর চলছে প্রত্যক্ষ আক্রমণ। নিঃশব্দে চলছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকির মতে আজ পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান জনসংখ্যা এরাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৪১% এরও বেশি। পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুর সংখ্যালঘু হতে আর কত সময় লাগবে? সেদিন আর দূরে নয় যেদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে কোন বন্দ্যোপাধ্যায়-চট্টোপাধ্যায় থাকবে না, থাকবে শুধু মোল্লা বা ইসলাম পদবিধারী ব্যক্তিরা। সেদিন এই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা শান্তি ও সুরক্ষার সাথে এখানে বসবাস করতে পারবেন তো? একদিন বাংলাদেশ থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে যেভাবে পালিয়ে আসতে হয়েছিল, ঠিক সেভাবে এই বাংলা ছেড়ে পালাতে হবে না তো? দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, নদীয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর সহ বাংলার যে যে জেলায় হিন্দুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেছে, সেখানে রাজনৈতিক সংঘর্ষ, ডাকাতি ইত্যাদি বিভিন্ন অছিলায় হিন্দুর উপর চলছে অবর্ণনীয় অত্যাচার। জমি দখল, ঘরবাড়ি লুঠ, পুড়িয়ে দেওয়া, ফসল ও মাছের ভেড়ি লুঠ থেকে শুরু করে হিন্দু নারীধর্ষণ, হত্যা ও অপহরণ – সব কিছুই চলছে অবাধে। এসবের আসল উদ্দেশ্য গ্রামের পর গ্রাম হিন্দুবিহীন করে দেওয়া। এখনই সচেতন না হলে কি আবার দেশভাগ, আবার উদ্বাস্তু হওয়া, আবার নারকীয় হত্যালীলা, মা বোনের সম্ভ্রমহানি আটকানো যাবে?
বাংলার জন-চরিত্রের পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলাচ্ছে এরাজ্যের চালচিত্র। ক্ষুদিরাম, বাঘ যতীন, বিনয়-বাদল-দীনেশের বিপ্লবী বাংলা এখন জেহাদী সন্ত্রাসবাদের আঁতুর ঘর – রশিদ খান, আফতাব আনসারি, ইয়াসিন ভাটকালদের লীলাক্ষেত্র। এন.আই.এ এবং আই.বি-র বক্তব্য অনুসারে বাংলাদেশ থেকে তাড়া খাওয়া বেশ কিছু সন্ত্রাসবাদী পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছে। এই সন্ত্রাসবাদীদের পিছনে মদত আছে এরাজ্যের সরকারী পার্টির কয়েকজন নেতার। এই সমস্ত নেতারা আবার লোকসভা এবং রাজ্যসভার এম.পি।তবুও বাংলার হিন্দু নির্বিকার।আমাদের এই উদাসীনতার মুল্য দিতে হবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে। আর সেই মুল্য হবে ভয়ংকর। আমাদের পূর্বপুরুষদের উদাসীনতার মূল্য দিয়েছি আমরা। তবুও ওপার থেকে অপমানজনকভাবে বিতাড়িত হয়ে এসে এই বাংলায় আমাদের ঠাঁই হয়েছিল। কাশ্মীরের হিন্দুর মত এই বাংলা থেকে বিতাড়িত হয়ে আমাদের ছেলে মেয়েরা কোথায় যাবে? তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? তারা কি আমাদের কাছে জবাব চাইবে না? তাই সময় থাকতে সচেতন হতে হবে, সংবেদনশীল হতে হবে। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে কোন একজন হিন্দুর উপর অত্যাচার হলে প্রত্যেকটি হিন্দু যেদিন ক্রোধে পাগল হয়ে উঠবে এবং প্রতিকার না হওয়া পর্যন্ত শান্ত হবে না – সেদিন থেকে হিন্দুর ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করবে। এই রকম সংবেদনশীল এবং প্রতিক্রিয়াশীল হিন্দুত্বই হিন্দু সমাজকে রক্ষা করতে পারবে, আমাদের দেশ এই সুজলা-সুফলা-শস্যশ্যামলা ভারতবর্ষকে রক্ষা করতে সক্ষম হবে। নান্যঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায়।

ভোট দিয়ে কিনলাম

‘এ রাজ্যের জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় চার কোটি মুসলমান৷ তাই এই রাজ্যের মুসলমানেরা যে রাজনৈতিক দলকে ভোট দেবে সেই দল বাংলায় ক্ষমতায় আসবে’ –  হলদিয়ায় এক জনসভায় একথা বললেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা মৌলানা ত্বহা সিদ্দিকী৷ মঞ্চে উপবিষ্ট তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী৷ ধর্ম ও রাজনীতির কী অপূর্ব মেলবন্ধন!  ধর্ম ও সম্প্রদায়ের আধারে ভোট দেওয়ার ডাক দিলেন মৌলানা৷ সেকুলার নেতা চুপ, সেকুলার মিডিয়া চুপ, সেকুলার বুদ্ধিজীবি মহল চুপ৷ এই একই আহ্বান যখন কোন হিন্দু ধর্মগুরু বা সাধু-সন্ত বলেছেন, তখনই সবার মুখ একসঙ্গে খুলেছে, হুক্কা-হুয়া রব উঠেছে – ‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি মানছি না’, ‘সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে রাজনীতি চলবে না’, ‘হিন্দু মৌলবাদ নিপাত যাক’ ইত্যাদি ইত্যাদি৷ সমাজ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তিদের স্বার্থের পুঁতিগন্ধযুক্ত এই মিথ্যাচারের ফলেই একদিন পাঞ্জাব ও বাংলার লাখ লাখ হিন্দুকে ধন – মান – ইজ্জত খুইয়ে সর্বস্বান্ত হতে হয়েছিল৷ প্রাণ দিতে হয়েছিল ধনী – দরিদ্র, ব্রাহ্মণ – নমঃশূদ্র, কংগ্রেস – সি পি এম হিন্দুকে৷ সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে৷ সাম্প্রদায়িক ব্লকভোট দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের এবং পেট্রোডলার দিয়ে বুদ্ধিজীবিদের কেনা হচ্ছে৷ বাংলার গ্রামে গ্রামে হিন্দু নিপীড়ন, হিন্দুর জমিদখল, হিন্দু মেয়েদের অপহরণ – চোখের সামনে দেখেও কৃতদাস নেতারা যেন ধৃতরাষ্ট্র৷ মিডিয়ার কাছে এগুলো নিউজ নয়৷ মুসলমানদের এই সাম্প্রদায়িক আগ্রাসী মানসিকতা যে বাংলাকে দ্বিতীয় কাশ্মীরে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা যেন সবাই বুঝেও বুঝছে না৷
এই মুসলিম আগ্রাসন থেকে কলকাতা শহর কি মুক্ত? কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সের কাছে মন্দিরের পাশেই মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা চলছে৷ পূর্ব কলকাতার গোবরা এলাকার আসগর মিস্ত্রী লেন-এ জমি দখল করে মসজিদের পরিকল্পনা হয়েছে৷ গত ৩রা জানুয়ারী সি আই টি রোডে নেপাল সুইটসের পাশে মাইক লাগিয়ে পুলিশের সামনে ঘোষণা করা হয়েছে যে, প্রশাসন অনুমতি না দিলে কলকাতা শহরকে স্তব্ধ করে দেওয়া হবে ‘চাক্কাজ্যাম’ করে৷ যে কেউ নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করলে সহজেই বুঝতে পারবে যে, হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় মসজিদ নির্মাণ করার এই উদ্যোগ কোন আধ্যাত্মিক প্রয়োজনে নয়, বরং হিন্দুসমাজের সামনে একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যে, আমরা তো এরকমই করব, তোমাদের ক্ষমতা থাকলে আটকাও৷
হিন্দু সমাজকে এই চ্যালেঞ্জ আজ নিতেই হবে৷ বাংলার হিন্দুকে যদি বাঁচতে হয়, এই মাটিকে বাঁচাতে হয়, তাহলে কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি স্থায়ী আনুগত্য দেখানো চলবে না৷ যে দল যখন হিন্দুস্বার্থ রক্ষা করবে, সেই দলকে তখন সক্রিয় সমর্থন করে ক্ষমতায় বসাতে হবে৷ সংখ্যালঘু মুসলমানেরা যদি এই কাজ করতে পারে তাহলে ‘এখনও পর্যন্ত সংখ্যাগুরু’ হিন্দুদের বাংলাকে বাঁচাতে এই কাজ করতেই হবে৷ ‘ভোট দিয়ে কিনলাম’ এর কাহিনী নতুন করে লিখতে হবে৷

আমরা ধর্মের নামে নিরন্তর অধর্ম করে চলেছি

ঈশ্বরভক্তিই যদি ধর্মের মাপকাঠি হয় তবে শিবভক্ত রাবণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ধার্মিক। কিন্তু রাবণ ছিলেন অধর্মের প্রতীক৷ ছলনা, কপটতামাত্রই যদি অধর্ম হয় তবে শ্রীকৃষ্ণ-র থেকে বড় অধার্মিক পৃথিবীতে আর জন্মগ্রহণ করে নি। অহিংসাই যদি পুণ্য হয় তবে রামচন্দ্র এবং শ্রীকৃষ্ণ মহাপাতক, মা দুর্গা এবং মা কালী পাপের দেবী। আধুনিক কালের ক্ষুদিরাম বোস, বিনয়-বাদল-দীনেশ, বাঘা যতীন, মাস্টারদা সূর্যসেন সকলেই ঘৃণার পাত্র। এই কথা গুলি সবাই জানেন যে কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ং, শ্রীরামচন্দ্র হলেন মর্যাদা পুরুষোত্তম এবং অসূরবংশ ধ্বংস করতেই মা দুর্গা ও মা কালীর আবির্ভাব৷ অর্থাৎ তাঁদের প্রদর্শিত পথই হল ধর্মের পথ৷ কিন্তু এই পথে চলার জন্য যে সাহস দরকার তা আমাদের মধ্যে নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, আমাদের এই দুর্বলতা স্বীকার করে নেওয়ার পরিবর্তে আমরা ধর্মের পরিভাষাকেই বদলে ফেলেছি৷ নিজেদের মত করে ধর্মের ব্যাখ্যা করে সমাজকে বিভ্রান্ত করে চলেছি৷ দুর্যোধনকে আমি শ্রদ্ধা করি এই কারণে যে তিনি মুক্ত কন্ঠে স্বীকার করেছিলেন - "জানামি ধর্মম্ ন চ মে প্রবৃত্তি, জানামি অধর্মম্ ন চ মে নিবৃত্তি"। অর্থাৎ ধর্ম কি, তা আমি জানি। কিন্তু আমার তাতে প্রবৃত্তি নেই। আর অধর্ম কি, তাও আমি জানি কিন্তু তা থেকে নিজেকে নিবৃত্ত করার ক্ষমতা আমার নেই। কিন্তু আমরা ধর্মের নামে নিরন্তর অধর্ম করে চলেছি। অধর্মকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছি। অপেক্ষা করে চলেছি ভগবানের কোন এক অবতারের আবির্ভাবের জন্য, যিনি এসে অধর্মের বিনাশ করবেন। আসলে ভগবান এখন আবির্ভূত হলে আমাদের মত অধার্মিকদের বিনাশ প্রথমে করবেন। যেমন করেছিলেন দেবাদিদেব মহাদেব। দক্ষরাজের অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করছিল সকলে। নীরব দর্শক, আমাদের মত। ভগবান শিব দক্ষরাজকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হন নি। সতীর মৃতদেহ সাথে নিয়ে প্রলয় শুরু করলেন এই অন্যায় কে প্রশ্রয়্দানকারী সমগ্র সৃষ্টিকে ধ্বংস করার জন্য। তাই কবি বলেছিলেন, "অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে"। আজকে দেগঙ্গা, নলিয়াখালী, উস্তি, নৈহাটিতে হিন্দুদের উপর অত্যাচার দেখেও আমরা নীরব। সামান্য মৌখিক প্রতিবাদ করা থেকেও আমরা বিরত। আমাদের ভগবান ক্ষমা করবেন না। শতবার ঘন্টা বাজিয়ে হাজার হাজার নামজপ করলেও নয়।

অন্যায়ের বিরুদ্ধে নির্ণায়ক যুদ্ধই হল ধর্ম৷

একটা বিশাল প্রাণীকে কাবু করে ফেলার পরেও অজগর কিন্তু একবারে সেটাকে গিলে খেতে পারে না৷ ক্ষমতা এবং ক্ষুধা অনুযায়ী একটু একটু করে গিলতে থাকে ৷ খাওয়া কতদিনে শেষ হবে তা নির্ভর করে শিকারের সাইজের উপরে এবং শিকারীর হজম ক্ষমতার উপরে৷ শিকারের ছটফটানি দেখে কেউ বলে যে এখনও ধড়ে প্রাণ আছে, এখনও লড়াই করছে, অাত্মসমর্পণ করে নি; সুতরাং যুদ্ধ শেষ হয় নি৷ তাহলে সে টেকনিক্যালি একশো শতাংশ সত্যি কথা বললেও সেই কথা কারো মনে এই আশা জাগাবে না যে, শেষ পর্যন্ত সেই শিকার অজগরের হাত থেকে নিষ্কৃতি পাবে৷

মুসলিম অাগ্রাসনের শিকার আমাদের হিন্দু সমাজের অবস্থা অাজ সেই অজগরের গ্রাসে আবদ্ধ অসহায় প্রাণীর মত৷ ৷ সুদীর্ঘ লড়াইয়ের পর অাজকে যদি আমরা হিসাবে বসি, তাহলে দেখবো আমাদের মাটি গেছে, দেশ ছোট হয়েছে৷ আমাদের মানুষ ধর্মান্তরিত হয়ে সমাজ ছেড়ে চলে গেছে, সমাজ ছোট হয়েছে৷ রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেলেও হিন্দুর ধর্মীয় স্বাধীনতা লুন্ঠিত হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে৷ আজও বাংলার গ্রামেগঞ্জে জমি দখল চলছে অবাধে৷ হিন্দু মেয়েদের ছলে-বলে-কৌশলে হিন্দু সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে লাভজেহাদের মাধ্যমে৷ হিন্দু সংখ্যালঘু এলাকাগুলিতে হিন্দুর ধর্মাচরণ সংখ্যাগুরুদের অনুমতিসাপেক্ষ৷ ভারতের ইসলামীকরণ চলছে নিজের গতিতে৷ আফগানিস্তান গেছে, পাকিস্তান গেছে, গেছে সোনার বাংলা৷ ভূস্বর্গ কাশ্মীর থেকেও নেই৷ পশ্চিমবঙ্গ, আসাম যাওয়ার পথে৷ সম্পূর্ণ ভারতের ইসলামীকরণ শুধু সময়ের অপেক্ষা৷

অাজকে  ভারতে যে মুসলমানদের দেখতে পাচ্ছি, তাদের সিংহভাগই তো হিন্দু থেকে ধর্মান্তরিত৷ সুদীর্ঘ মুসলিম শাসনে যারা ভয়ে অথবা স্বার্থের লোভে হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে গিয়েছিল, তাদেরই বংশধর৷ আর ভারতের হিন্দুদের বর্তমান প্রজন্ম হল সেই সব বীর এবং ধর্মনিষ্ঠ ব্যক্তিদের উত্তরসূরী, যাঁরা সেই সময় শাসক মুসলিম শক্তির বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই করেছেন কিন্তু ধর্মত্যাগ করেন নি৷ কিন্তু আজকে আমরাই মুসলিম আগ্রাসনের সামনে পর্যুদস্ত হয়ে পড়ছি৷ তাদের অন্যায়, অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে সাহস করছি না৷ বরং কোন সাহসী হিন্দু রুখে দাঁড়ালে, তাকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করার পরিবর্তে তাকেই উল্টে দোষারোপ করছি৷ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দুরা নরকযন্ত্রণা ভোগ করেও অত্যাচারী মুসলমানদের সাথে আপোষ করে থাকাটাকেই নিরাপদ বলে মনে করে৷ হিন্দু প্রতিরোধের কথা, হিন্দুর এবং তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থরক্ষার কথা বলতে গেলে বলে,"আপনারা এখানে আসা যাওয়া না করলেই আমরা ভালো থাকবো"৷ আর যেখানে মুসলিম সমস্যা এখনও প্রকট হয়ে ওঠে নি, সেখানকার হিন্দুরা উদাসীন৷

এই ক্লীবতা, কাপুরুষতা, জড়তা, সংবেদনহীনতাকে সম্বল করে শুধু প্রাচীন গৌরবগাথা গেয়ে কোন জাতি টিকে থাকতে পারে না৷ হিন্দুকে যদি অস্তিত্ব রক্ষা করতে হয়, তবে এই জড়তাকে ঝেড়ে ফেলে মাথা উচু করে দাঁড়াতে হবে৷ চাই একটা মরিয়া প্রয়াস৷ যেখানেই একজন হিন্দুর উপরে অত্যাচার হবে, প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে হবে৷ প্রতিকার করতে হবে তৎক্ষণাৎ৷ সাপ ফণা তোলার সাথে সাথে থেঁতলে দিতে হবে সেই ফণা ৷ তবেই হিন্দু বাঁচবে, দেশ বাঁচবে৷ মনে রাখতে হবে অন্যায়ের সাথে আপোষ করে শান্তিলাভ করা যায় না৷ শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় অন্যায়ের বিনাশ হলে৷ গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আঠারো অধ্যায় ধরে অর্জুনকে এই শিক্ষাই দিয়ে গেছেন৷ অধর্মের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াইয়ের বার্তাই হল গীতাসার৷ অন্যায়ের বিরুদ্ধে নির্ণায়ক যুদ্ধই হল ধর্ম৷ বাঁচার অন্য কোন পথ নাই৷ তাই অাজ আবার ফিরে আসুক: - 
                            "সে এক দিন, লক্ষ পরাণে শঙ্কা না মানে, না রাখে কাহার ঋণ
                                           জীবন মৃত্যু পায়ের ভৃত্য, চিত্ত ভাবনাহীন৷৷"