Tuesday, November 6, 2018

তিনসুকিয়া হত্যাকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই

আসামের তিনসুকিয়ায় আলফা জঙ্গিরা পাঁচজন বাঙালি হিন্দুকে হত্যা করেছে। নিন্দা করার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তবে কয়েকটা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।

প্রথমত, আলফা নামের জঙ্গি সংগঠনটির বাস্তবে অস্তিত্ব কতটা আছে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। অনেকদিন আগেই এদের আত্মা মরে গেছে। খোলনলচে যেটুকু পড়ে ছিল, সেটা আইএসআই-এর স্টুজ হিসেবে কাজ করছিল। আমার ধারণা, এখন আইএসআই সরাসরি আলফার নামকে সামনে রেখে কাজ চালাচ্ছে এবং এই নৃশংস হত্যাকান্ডের গেমপ্ল্যানও তাদেরই তৈরী।

দ্বিতীয়ত, আসামের ইসলামিকরণের পথে সব থেকে বড় অন্তরায় নাগরিকত্ব বিল। এই বিল পাশ হলে আসামের জনবিন্যাসের চিত্রটা বদলে যাবে। এনআরসিতে মুসলমানদের নাম খুব বেশী বাদ যায় নি। বরং একটা বিরাট সংখ্যক হিন্দুর নাম বাদ গেছে। সুতরাং নাগরিকত্ব বিল পাশ না হলে আসামে মুসলিম জনসংখ্যার পার্সেন্টেজ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে। ফলস্বরূপ আসামের রাজনৈতিক ক্ষমতা মুসলমানদের হাতের মুঠোয় সহজেই চলে আসবে। তখন এনআরসি তালিকা বহির্ভূত হিন্দুদের কথা বাদ দিলাম, যাদের নাম তালিকায় রয়েছে তাদের ভবিষ্যত কতটা সুরক্ষিত থাকবে সেটাই কি চিন্তার বিষয় নয়? সংখ্যালঘু অহমীয়া হিন্দুরাও কি সেই জেহাদী আগ্রাসনের হাত থেকে রক্ষা পাবেন?

কিন্তু নাগরিকত্ব বিল পাশ হলে আসামের ইসলামিকরণের এই ষড়যন্ত্র একটা বড় ধাক্কা খাবে। তাই একটা সম্ভাব্য জাতিদাঙ্গার আতঙ্ক সৃষ্টি করে নাগরিকত্ব বিলকে আটকে রাখার চক্রান্তের একটা ঘৃণ্য কাপুরুষোচিত কর্মসূচী হল তিনসুকিয়ার এই পাঁচজন বাঙালি হিন্দুর নৃশংস হত্যাকান্ড। আইএসআই এবং তার দালালরা তাদের স্বপ্নের ইসলামিক আসাম গড়ার লক্ষ্যে যেকোনো মূল্যে নাগরিকত্ব বিল আটকানোর চেষ্টা করছে। অহমীয়া সমাজের একটা ক্ষুদ্র অংশ হুজুগে এদের সাথে তাল মিলালেও বৃহত্তর অহমীয়া সমাজ এই ফাঁদে পা দেবেন না বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। কিন্তু এই সমস্যার সমাধানের একমাত্র উপায় অতিশীঘ্র যেকোনো ভাবে নাগরিকত্ব বিল পাশ করিয়ে হিন্দু বাঙালিদের নাগরিকত্ব প্রদান করা। কেন্দ্র সরকারকে এই দৃঢ় পদক্ষেপ নিতেই হবে। পরিণামে রাজ্যে যদি কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে তার মোকাবিলা কঠোরভাবে করতে হবে। সর্বোপরি বাঙালি হিন্দু সমাজ এবং অহমীয়া হিন্দু সমাজের সচেতন ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে কারণ, আজ দুপক্ষের সামনেই অস্তিত্বের সংকট সমুপস্থিত। এই মুহূর্তে মনের মিল না হলেও স্ট্র্যাটেজিক অ্যালায়েন্স করেই এই কাজ করতে হবে।
(কাউকে উপদেশ অথবা জ্ঞান দেওয়া এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। আমার মনের ভাব, যা আমার একান্ত ব্যক্তিগত, তা ব্যক্ত করলাম মাত্র।)

No comments:

Post a Comment