আসামে এনআরসি এক কথায় পর্বতের মূষিক প্রসব। বরং এই এনআরসি-র ফলশ্রুতিতে বাঙালি হিন্দুদের একটা বিরাট অংশ ( সেটা ৯ লাখ না ১১ লাখ জানিনা) আজ অনিশ্চয়তার সামনে। হিন্দু সংহতি এদের পাশে থাকবে। ভারতে থাকার অধিকার এদের আছে, সেই অধিকার আদায় করার লড়াইয়ে আমরা সাথে ছিলাম, আছি আর থাকবো।
৩৭০ ধারা রদ হলো। সারা দেশে 'এক নিশান, এক বিধান, এক প্রধান' প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দিকে আমরা একধাপ এগিয়ে গেলাম। আর আজ বিজেপি শাসিত আসামে কেন্দ্রের 'পাসপোর্ট আইন ২০১৫' মূল্যহীন! এই আইনে বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে বিতাড়িত হিন্দুরা ভারতে আশ্রয় নিলে তাদের ভারতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সারা ভারত এই আইন মেনে চলবে, আর আসামে তা চলবে না, চলবে 'আসাম চুক্তি'! বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার প্রণোদিত 'পাসপোর্ট আইন ২০১৫' কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিজেপি শাসিত আসাম রাজ্যে এনআরসি-র ভিত্তি আজ কংগ্রেস জমানার সেই 'আসাম চুক্তি'! কেন্দ্রের এই আইনের সুবিধা সারা ভারতের হিন্দু শরণার্থীরা পাবে, কিন্তু আসামের বাঙালি হিন্দু শরণার্থীরা পাবে না!
এই বৈষম্য চলবে না। আমরা আসামের শরণার্থী হিন্দুদের প্রতি এই বৈষম্যমূলক আচরণের তীব্র বিরোধিতা করছি। কেন্দ্রীয় সরকার এবং আসামের রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, একজন শরণার্থী বাঙালি হিন্দুকেও যেন বিদেশী বলে গ্রেফতার অথবা বিতাড়িত করা না হয়। পাশাপাশি এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে হিন্দু সংহতি শীঘ্রই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করতে চলেছে।
কিন্তু সব থেকে বড় প্রশ্ন, যে কয়েক লাখ হিন্দুর নাম বাদ গেল, তারা কি করবে? হয় তাদের বৈধ কাগজপত্র দিয়ে প্রমাণ করতে হবে যে তারা বিদেশী নয়। অথবা তাদের মুক্তকন্ঠে স্বীকার করতে হবে যে তারা বাংলাদেশ থেকে ধর্মীয় কারণে বিতাড়িত হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এই লক্ষ লক্ষ বাঙালি হিন্দু রাস্তায় নামবেন? অন্তত এদের ১০-১৫% লোক? বড় কঠিন প্রশ্ন! রোহিঙ্গাদের দেখছি আর অবাক হচ্ছি। বুক ঠুকে বলে বেড়াচ্ছে, হ্যাঁ আমরা বিতাড়িত। থাকতে দিতে হবে, সুযোগ সুবিধা দিতে হবে, জল দিতে হবে, খাবার দিতে হবে। সবাই দিচ্ছেও ওদের! কতজন ওরা সর্বসাকুল্যে? আর আমরা আসামে কত লক্ষ? ওরা পারছে, আমরা পারছি না কেন?
No comments:
Post a Comment