একটা বাস্তব, তা যতই কঠোর হোক না কেন, আমাদের স্বীকার করে নেওয়া উচিত যে বাঙালী হিন্দুরা, ব্যক্তিগত স্তরেই হোক অথবা সাংগঠনিক স্তরেই হোক, কোনদিনই এক ছাতার তলায় এসে লড়াই করতে পারে নি, পারবেও না৷ এক লক্ষ্যে চলার ক্ষেত্রে ভিন্ন মত ও ভিন্ন পথের উদ্ভব অতীতে বার বার হয়েছে, ভবিষ্যতেও হতে থাকবে৷ একে স্বীকার করে নিয়েই পথ বার করতে হবে৷ সংগঠনের নেতৃত্বের মানসিকতাই যেহেতু সংগঠনের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বা policy making এর ক্ষেত্রে প্রতিফলিত হয়, তাই ব্যক্তির মানসিকতাটাই আসল৷ চিন্তা ভাবনার বৈচিত্র্যকে প্রগতির লক্ষণ বলেই আমি মনে করি৷ কিন্তু পারস্পরিক সম্মান এবং সমন্বয় থাকা দরকার৷ কারো exposure বেশি হবে, কেউ থাকবে আড়ালে৷ এটা ব্যক্তির স্বভাব, তার প্রতিভা, তার যোগ্যতা, তার বেছে নেওয়া পথ বা তার উপরে ন্যস্ত কাজের প্রকৃতির উপরে নির্ভর করবে৷ যার exposure বেশি, তার নাম যশ হবে, যে আড়ালে থাকবে তাকে বা তার অবদানের কথা কেউ জানতে পারবে না৷ কিন্তু পারস্পরিক সম্মান এবং সমন্বয়ের জায়গাটা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখাটা প্রত্যেকের কর্তব্য বলে আমি মনে করি৷
আমরা সচরাচর দেখে থাকি, যে ব্যক্তি বা সংগঠনের exposure বেশি, সে ধরা কে সড়া জ্ঞান করতে শুরু করে৷ পাশাপাশি যারা আড়ালে থাকে তাদের মধ্যে ক্ষোভ, ঈর্ষা দানা বাঁধতে শুরু করে৷ এটা প্রকৃতিগত আর প্রকৃতিকে অস্বীকার করে, তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে নিজের সমস্ত শক্তি ব্যয় করার পিছনে কোন যুক্তি আছে বলে আমি মনে করি না৷ কারণ আমাদের শক্তিটাকে সঠিক জায়গাতেই প্রয়োগ করতে হবে৷ এটাই Thumb rule৷ কিন্তু মানুষের এই ভাবাবেগগুলো প্রাকৃতিক আর প্রকৃতির বেগগুলোকে চেপে রাখলে নিজের এবং বাকীদের জন্যও তা অস্বস্তির কারণ হয়ে ওঠে! শরীর সম্বন্ধীয় বেগগুলোকে পশুদের মত মানুষও সহজেই বুঝতে পারে৷ কিন্তু নিজের চিন্তা ভাবনার গতি প্রকৃতি যারা যত বেশী বুঝতে পারে, তারা তত বেশি পরিণত মস্তিষ্ক বলে আমি মনে করি৷ শারীরিক বেগ উপস্থিত হলে আমরা পশুদের মতই তা থেকে নিবৃত্ত হই৷ কিন্তু তার জন্য কোন সময় বাথরুমে যাই, কোন সময় বেডরুমে যাই৷ পশুদের মত public place এ সেগুলি সম্পন্ন করি না৷ একেই সংস্কৃতি বলা হয়৷ তাই সংস্কৃতিবান ব্যক্তি মানসিক বেগ উপস্থিত হলে সব দিক বিবেচনা করে, প্রতিক্রিয়া করবেন এটাই অপেক্ষিত৷ মোটের উপর, মানসিক বেগ উপস্থিত হলে তাকে চিনতে পারা, সেই উদ্ভুত চিন্তার পিছনে logic এবং honesty আছে, না কি শুধুমাত্র ego আছে - তা বুদ্ধি দিয়ে বিচার করা এবং স্থান, কাল, পাত্র দেখে প্রতিক্রিয়া করা - এই তিনটি বিষয়ে আমাদের যত্নবান হতে হবে৷
No comments:
Post a Comment