Thursday, March 5, 2015

মহারাষ্ট্র সরকারের এই সাহসী পদক্ষেপ কি ভারতের রাজনীতিতে নতুন যুগের বার্তা নিয়ে এলো?

মহারাষ্ট্র অ্যানিমল প্রিভেনশন অ্যাক্ট (এমএপিএ) অনুযায়ী এই রাজ্যে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ হল গোরু, ষাঁড়, বলদ, বাছুর হত্যা। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় সোমবারই এই নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে তাঁর সম্মতি জানিয়েছেন। এই আইনের অমান্য করলে শাস্তি অজামিন যোগ্য ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। মহারাষ্ট্রে পশুহত্যা বিরোধী আইনে আগে এই সাজার মেয়াদ ছিল ছয় মাস। জরিমানার টাকার অঙ্কও ১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার করা হয়েছে।
১৯৯৫ সালে বিজেপি ও শিবসেনার জোট সরকার এমএপিএ-এর অধীনে ষাঁড়, বাছুর হত্যা বন্ধ করতে চেয়ে একটি অ্যামেন্ডমেন্ট আনতে উদ্যোগী হয়। বিধানসভায় এই বিল পাশ হওয়ার পরে ১৯৯৬ সালে কেন্দ্রের কাছে সম্মতি জানানোর জন্য এই বিল পাঠানো হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে সোমবার মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের কাছে একটি চিঠি আসে। এই চিঠিতে জানানো হয়েছে ভারতীয় সংবিধানের ২০১ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

পাশাপাশি সরকারী চাকুরী এবং শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলমানদের জন্য ৫% সংরক্ষণের যে অধ্যাদেশ এনেছিল পূর্ববর্তী কংগ্রেস-এন সি পি সরকার, তাকেও সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছে বর্তমান দেবেন্দ্র ফড়নবিস সরকার৷

বিজেপি নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্র সরকারের এই সিদ্ধান্ত বর্তমান রাজনৈতিক ধারার সম্পূর্ণ বিপরীতে গৃহীত একটি ব্যতিক্রমী এবং সাহসী সিদ্ধান্ত৷ এই সিদ্ধান্ত একদিকে যেমন মহারাষ্ট্রসহ সারা ভারত তথা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা হিন্দুদের মনে এক আশার সঞ্চার করবে , পাশাপাশি হিন্দুদের উপরে এক বিশাল দায়িত্বও অর্পণ করবে ৷ এই সিদ্ধান্তের প্রভাব নিশ্চিতভাবে মহারাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না৷ এর ঢেউ আছড়ে পড়বে ভারতের সর্বত্র৷ হিন্দু সেন্টিমেন্টকে সম্মান জানিয়ে এত বড় পদক্ষেপ অবশ্যই দেশের হিন্দুদের মনোবলকে যথেষ্ট পরিমাণে চাঙ্গা করবে৷ দেশব্যাপী হিন্দুদের অনুভব হবে যে নরেন্দ্র মোদীকে হাত খুলে ভোট দিয়ে আমরা ভুল করি নি৷ পাশাপাশি বিজেপি-র কাছে হিন্দুদের আশা-আকাঙ্ক্ষার মাত্রাটাও অনেকটা বেড়ে যাবে৷ এক্ষেত্রে হিন্দুদের কাছে বিজেপিও কি কিছু আশা করবে না? তাই হিন্দুকে আজ দেওয়া নেওয়ার এই খেলায় সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখাতে হবে৷ এই পদক্ষেপের উপযুক্ত প্রতিদান বিজেপি-র অবশ্যই প্রাপ্য৷ সেই প্রতিদান দেওয়ার দায়িত্ব হিন্দু সমাজকে নিতে হবে৷ গত লোকসভা ভোটের মত আগামী বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনগুলিতে প্রমাণ করতে হবে যে এদেশে ভোটে জিততে হলে আর মুসলিম তোষণ করতে হয় না৷ যে দল হিন্দু হিতের কাজ করবে, এদেশে একমাত্র তারাই রাজ করবে৷ এদেশের রাজনীতিতে মুসলিম বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি এবং তাদের দোসর সেক্যুলারবাদীদের পায়ের তলায় আজ আর মাটি নেই৷ কিন্তু এজন্য বিজেপিকেও হিন্দুর বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে হবে৷ তাই আরও কয়েকটি ইস্যুতে বিজেপিকে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল - জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, অনুপ্রবেশ আটকানো, ইউনিফর্ম সিভিল কোড ইত্যাদি৷ আজকে বিজেপি যদি দেশরক্ষা, হিন্দুরক্ষার জন্য অত্যন্ত আবশ্যক এই সমস্ত ইস্যুতে সস্তা রাজনীতির ঊর্দ্ধে উঠে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারে, হিন্দুরাও বিজেপিকে বিমুখ করবে না৷ তবে একথা বলতে কোন দ্বিধা নেই যে মহারাষ্ট্র সরকারের এই পদক্ষেপ বিজেপি-র আদর্শের প্রেরণাতেই হোক বা রাজনৈতিক রণকৌশলগত কারণেই হোক, হিন্দুর জন্য উত্তম৷ কমপক্ষে এখান থেকে হিন্দু তোষণের রাজনীতির শুভারম্ভ তো হলো!

No comments:

Post a Comment