Sunday, March 8, 2015

আইসিস, তালিবানদের বর্বরতাই কি তৎকালীন ভারতে মুসলিমদের অত্যাচারের প্রকৃষ্ট প্রমাণ নয়?


আফগানিস্তানে পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা সুবিশাল সেই বুদ্ধমূর্তি, যাকে ওয়ার্লড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছিল ইউনেস্কো, শান্তির ধর্ম ইসলামের নামে সভ্যতার ইতিহাসের অন্যতম সেই প্রতীক ধ্বংস করেছিল তালিবানরা। এবার ইরাকে একই ভুমিকায় আইসিস৷ সুপ্রাচীন অ্যাসিরিয় সভ্যতার রাজধানী নিমরুদের অমূল্য সব স্থাপত্য, মূর্তি, লিপি, ভেঙে-গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিল এই জঙ্গিরা। ধ্বংস করে ফেলা হল খ্রীষ্টের জন্মের তেরোশ বছর আগেকার অ্যাসিরিয় সভ্যতার নিদর্শন। মুছে গেল মানুষের সভ্যতার আরও এক সুপ্রাচীন অধ্যায়। অ্যাসিরিয়ার রাজধানী নিমরুদের ধ্বংসস্তূপ থেকে বহু যুগের চেষ্টায় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা উদ্ধার করেছিলেন সেই সময়কার বহু মূর্তি , ভাস্কর্য ও কিউনিফর্ম লিপি। সেগুলি থেকে ধাপে ধাপে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল মানুষের সুপ্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস। মসুলের কাছে এক মিউজিয়মে রাখা ছিল সেই সব অমূল্য উদাহরণ। ইতিহাসের সেই সব নিদর্শন একে একে গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হল ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষে। বড় বড় হাতুড়ি, ইলেকট্রিক ড্রিল নিয়ে এসে ভেঙে ফেলা হল রাজা আসুরবানিপালের মূর্তি। কত সব মূর্তি, ভাস্কর্য, মুখের আদল গুঁড়িয়ে ফেলা হল কয়েক ঘণ্টায়, যেগুলি তৈরি করার মত দক্ষতায় পৌছতে মানুষকে চেষ্টা করতে হয়েছে কয়েক শতাব্দী ধরে। নিমরুদ থেকে পাওয়া গিয়েছিল দু ডানাওয়ালা সিংহের মূর্তি। ইতিহাসের ধূলো ঘেঁটে জানা গিয়েছিল সেই মূর্তি গড়া হয়েছিল খ্রীষ্টপূর্ব নবম শতকে। গুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছে সেই মূর্তিও।

বিশ্বের তাবড় বুদ্ধিজীবিমহল চিৎকার করে গলা ফাটাচ্ছে যে এই সন্ত্রাসের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই৷ ওদিকে ইসলামের মূল গ্রন্থ কোরাণের আয়াতগুলি, তাদের সমাজের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত আঞ্জেম চৌধুরী ও জাকির নাইকের মত ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্য এবং মুসলমানদের অতীত ও বর্তমান বিধ্বংসী কার্যকলাপ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে ইসলামের নির্মম, নিষ্ঠুর সত্যটাকে৷ উদাত্ত কন্ঠে ঘোষণা করছে যে তালিবান, আইসিস, বোকোহারাম যা করছে সেটাই বিশুদ্ধ ইসলাম৷ এই সত্যদর্শন করার জন্য দার্শনিকের প্রজ্ঞা দরকার হয় না৷ দরকার খোলা চোখ আর নিজের চোখের উপর পূর্ণ বিশ্বাস৷ পেট্রোডলারজীবি, রাজনৈতিক নেতাদের উচ্ছিষ্টভোগী বুদ্ধিজীবিদের চোখ দিয়ে দেখলে সত্যকে দেখা যাবে না৷ কোরাণ পড়ুন৷ দেখবেন কোরাণে বর্ণিত পথনির্দেশ কিভাবে বাস্তবে রূপায়িত করছে আইসিস৷ ইসলাম কি? কোরাণ- হাদিশের তত্ত্ব ইসলাম না কি বুদ্ধিজীবিদের বকোয়াস্ ইসলাম ? তালিবান, আইসিসরা যা করে চলেছে তাকে সম্পূর্ণরূপে সমর্থন করে ইসলামের তত্ত্ব৷ মাঝখান থেকে যারা বলে চলেছে ইসলামের সাথে এই সন্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই, তারা বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করছে যাতে তালিবান বা আইসিসের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ তৈরী হলেও ইসলাম সামগ্রিকভাবে সঙ্কটগ্রস্ত না হয়৷ এদের ইসলামের বেতনভোগী এজেন্ট ছাড়া আর কী বলা যায়?

ইসলামের রণকৌশল হল যেখানে এবং যতদিন তারা দুর্বল থাকবে , সেখানে ততদিন তারা মিলেমিশে থাকবে বাকীদের সাথে৷ আর যেখানে পর্যাপ্ত শক্তি অর্জন করবে, সেখানেই শুরু করবে ইসলামীকরণের অভিযান- ডাইরেক্ট অ্যাকশন৷ সব ফ্রন্টে একসাথে লড়াই হবে না৷ যারা লড়াই করছে না, তারা গোপনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে যারা লড়াই করছে তাদের প্রতি৷ পাশাপাশি প্রয়োজন হলে প্রকাশ্যে মৃদু ভাষায় তিরস্কার করবে সন্ত্রাসবাদীদের৷ এই উল্টোপুরাণ শুনে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছুই নেই৷ কারণ এটাও ইসলাম অনুমোদিত রণকৌশল৷ ইসলামের পরিভাষায় একে 'তাকিয়া' বলা হয়৷ আর এই সম্পূর্ণ প্রসেস্ হল জেহাদ৷ জেহাদ প্রতিটি মুসলমানের জন্য পবিত্র কর্তব্য, জন্নতে যাওয়ার শর্টকাট রাস্তা ৷ সারমর্ম হল, যারা কোরাণে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাসী তারাই মুসলমান, যারা মুসলমান তারাই জেহাদী, যারা জেহাদী তারাই তালিবান, আইসিসদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সহচর৷ জেহাদের এই মডেল আমাদের কাছে নতুন নয়৷ যেখানে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ সেখানেই হিন্দুর উপরে অত্যাচার, আর যেখানে মুসলমানরা দুর্বল, সেখানে দাঁত কেলিয়ে মিলেমিশে থাকা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিছিলে সামনের সারিতে অবস্থান৷ কাশ্মীর থেকে শুরু করে বাংলার মুর্শিদাবাদ, মালদা, দিনাজপুর, নদীয়া, দুই ২৪ পরগণা, বীরভূম-সর্বত্র একই চিত্র৷ গত লোকসভা নির্বাচনে মোদীর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত মুসলমানরাই আজকে রাতারাতি মোদীভক্ত হয়ে দলে দলে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে৷ তাকিয়া তাকিয়া তাকিয়া ! রাম পুণ্যানির মত বামপন্থী বুদ্ধিজীবিরা আমাদের আজও বুঝানোর চেষ্টা করেন যে আমাদের দেশের মুসলমান শাসকেরা মন্দির ধ্বংস করেছিলেন, তরবারির সামনে ধর্মান্তরিত করেছিলেন, গণহারে কাফের হত্যা করেছিলেন - এসব কথা সত্য নয়৷ এসব হিন্দু মৌলবাদীদের বানানো গল্প৷ তাদের কথা যে কতটা মিথ্যা তা প্রমাণ করার জন্য অতীতে যাওয়ার কি কোন দরকার আছে? বর্তমানের আইসিস, তালিবানদের বর্বরতাই কি তৎকালীন ভারতে মুসলিমদের অত্যাচারের প্রকৃষ্ট প্রমাণ নয়?

তাই আজ নিজের চোখ দিয়ে দেখুন, দেখবেন আগতপ্রায় ধ্বংসলীলার ভয়ংকর চিত্র৷ নিজের কান দিয়ে শুনুন, শুনতে পাবেন মহাতান্ডবের পদধ্বনী৷

No comments:

Post a Comment