Wednesday, March 4, 2015

ভোট দিয়ে কিনলাম

‘এ রাজ্যের জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় চার কোটি মুসলমান৷ তাই এই রাজ্যের মুসলমানেরা যে রাজনৈতিক দলকে ভোট দেবে সেই দল বাংলায় ক্ষমতায় আসবে’ –  হলদিয়ায় এক জনসভায় একথা বললেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা মৌলানা ত্বহা সিদ্দিকী৷ মঞ্চে উপবিষ্ট তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী৷ ধর্ম ও রাজনীতির কী অপূর্ব মেলবন্ধন!  ধর্ম ও সম্প্রদায়ের আধারে ভোট দেওয়ার ডাক দিলেন মৌলানা৷ সেকুলার নেতা চুপ, সেকুলার মিডিয়া চুপ, সেকুলার বুদ্ধিজীবি মহল চুপ৷ এই একই আহ্বান যখন কোন হিন্দু ধর্মগুরু বা সাধু-সন্ত বলেছেন, তখনই সবার মুখ একসঙ্গে খুলেছে, হুক্কা-হুয়া রব উঠেছে – ‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি মানছি না’, ‘সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে রাজনীতি চলবে না’, ‘হিন্দু মৌলবাদ নিপাত যাক’ ইত্যাদি ইত্যাদি৷ সমাজ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তিদের স্বার্থের পুঁতিগন্ধযুক্ত এই মিথ্যাচারের ফলেই একদিন পাঞ্জাব ও বাংলার লাখ লাখ হিন্দুকে ধন – মান – ইজ্জত খুইয়ে সর্বস্বান্ত হতে হয়েছিল৷ প্রাণ দিতে হয়েছিল ধনী – দরিদ্র, ব্রাহ্মণ – নমঃশূদ্র, কংগ্রেস – সি পি এম হিন্দুকে৷ সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে৷ সাম্প্রদায়িক ব্লকভোট দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের এবং পেট্রোডলার দিয়ে বুদ্ধিজীবিদের কেনা হচ্ছে৷ বাংলার গ্রামে গ্রামে হিন্দু নিপীড়ন, হিন্দুর জমিদখল, হিন্দু মেয়েদের অপহরণ – চোখের সামনে দেখেও কৃতদাস নেতারা যেন ধৃতরাষ্ট্র৷ মিডিয়ার কাছে এগুলো নিউজ নয়৷ মুসলমানদের এই সাম্প্রদায়িক আগ্রাসী মানসিকতা যে বাংলাকে দ্বিতীয় কাশ্মীরে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা যেন সবাই বুঝেও বুঝছে না৷
এই মুসলিম আগ্রাসন থেকে কলকাতা শহর কি মুক্ত? কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সের কাছে মন্দিরের পাশেই মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা চলছে৷ পূর্ব কলকাতার গোবরা এলাকার আসগর মিস্ত্রী লেন-এ জমি দখল করে মসজিদের পরিকল্পনা হয়েছে৷ গত ৩রা জানুয়ারী সি আই টি রোডে নেপাল সুইটসের পাশে মাইক লাগিয়ে পুলিশের সামনে ঘোষণা করা হয়েছে যে, প্রশাসন অনুমতি না দিলে কলকাতা শহরকে স্তব্ধ করে দেওয়া হবে ‘চাক্কাজ্যাম’ করে৷ যে কেউ নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করলে সহজেই বুঝতে পারবে যে, হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় মসজিদ নির্মাণ করার এই উদ্যোগ কোন আধ্যাত্মিক প্রয়োজনে নয়, বরং হিন্দুসমাজের সামনে একটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া যে, আমরা তো এরকমই করব, তোমাদের ক্ষমতা থাকলে আটকাও৷
হিন্দু সমাজকে এই চ্যালেঞ্জ আজ নিতেই হবে৷ বাংলার হিন্দুকে যদি বাঁচতে হয়, এই মাটিকে বাঁচাতে হয়, তাহলে কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রতি স্থায়ী আনুগত্য দেখানো চলবে না৷ যে দল যখন হিন্দুস্বার্থ রক্ষা করবে, সেই দলকে তখন সক্রিয় সমর্থন করে ক্ষমতায় বসাতে হবে৷ সংখ্যালঘু মুসলমানেরা যদি এই কাজ করতে পারে তাহলে ‘এখনও পর্যন্ত সংখ্যাগুরু’ হিন্দুদের বাংলাকে বাঁচাতে এই কাজ করতেই হবে৷ ‘ভোট দিয়ে কিনলাম’ এর কাহিনী নতুন করে লিখতে হবে৷

No comments:

Post a Comment